সাতক্ষীরা জেলখানার জেলার হাসনা জাহান বিথী এর বিরুদ্ধে কর্তব্যরত অসুস্থ কারারক্ষী হাসিবুর রহমানের সাথে অমানবিক আচরনের অভিযোগ উঠেছে। ওই কারাক্ষী ও তার পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন। তবে, এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলার নিজেই।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কারারক্ষী হাসিবুর রহমান কাঁদতে কাঁদতে তার উপর অমানবিক আচরনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় হার্টের সমস্যা নিয়ে তিনি শনিবার (৬ জুলাই) কারা হাসপাতালে যান। পরে সেখান থেকে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সদর হাসপাতালে নেয়ার আগে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে আনার জন্য জেলখানার গেটে গেলে তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন জেলার হাসনা জাহান বিথী। এমনকি সরকারী গাড়ি দিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। বাধ্য হয়ে তারা তাকে ভ্যান যোগে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সদর হাসপাতাল থেকে ইজিবাইক যোগে তাকে মেডিকেলে পাঠানো হয়।
অসহায় এই কারারক্ষীর বড় ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া নিহাল শেখ তার বাবাকে বাঁচাতে স্ট্রেচারে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যায় সদর হাসপাতাল ও পরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে। এ সময় বাবাকে বাঁচানোর জন্য প্রানপণ লড়াই করতে দেখা যায় তাকে।
এসময় সে সাংবাদিকদের জানায়, আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য জেলখানার প্রধান কর্তকর্তা তাদের সরকারী গাড়িটা পর্যন্ত দেয়নি। এমনকি তাদের সাথে খুব খারাপ আচরণ করেছেন তিনি।
একই কথা বলেন কারারক্ষী হাসিবুরের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার। তিনি বলেন, আমরা আমার স্বামীর অসুস্থতার খবর শুনে কারাফটকে গেলে আমাদের সাথে খারাপ আচরন করে বের করে দেয়া হয়। এমনকি তার স্বামীর সারাদিনে কোন খোঁজ খবর পর্যন্ত নেননি জেলার।
কারারক্ষী হাসিবুরের ভাই সজিব শেখ বলেন, আমার ভাইয়ের অসুস্থতার খবর শুনে সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি জেলার আমার ভাইকে অপদার্থ, কুলাঙ্গারসহ বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালি দিচ্ছে।
তিনি বলছেন, তুই এতো দেনা দায় হয়েছিস কেন ? এমনকি বাবা মাকে নিয়েও খারাপ কথা বলেন। একপর্যায়ে সাসপেন্ড করানো ও চাকুরী খাওয়ার ভয় দেখান।
তবে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথী জানান, হাসিবুর তাদের মাধ্যমে হাসপাতালে গিয়েছেন। তবে, যারা বাসা নিয়ে থাকেন তারা নিজেরা ডাক্তার দেখান। অসুস্থ অবস্থায় তাকে সরকারী গাড়িযোগে হাসপাতালে কেন পাঠানো হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উনাকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি। তার পরিবারের লোকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত আমি আমার কোন স্টাফের সাথে খারাপ ব্যবহার করনি।
খুলনা গেজেট/এএজে