খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ মাঘ, ১৪৩১ | ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
  যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ৬ আরোহি নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা
চার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

মঙ্গলবার ভোরে উপকূল অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড়

গেজেট ডেস্ক

আন্দামান সাগরের কাছের লঘুচাপটি রোববার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। আগামী মঙ্গলবার ভোরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এর ফলে নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপকূলে আগামী দুই দিন প্রবল বৃষ্টি হতে পারে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি পুরো বরিশাল বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। রাতে অমাবস্যার কারণে উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ থেকে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি নিয়ে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) ঘণ্টায় ঘণ্টায় তথ্য দিলেও এ নিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিম্নচাপ সৃষ্টির তথ্য ছাড়া আর কোনো আপডেট নেই। ভারতের কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে দেশটির উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ব্যাপক কার্যক্রম নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ৪৬টি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি আছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। আমাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের আবহাওয়া দপ্তর জাপান ও ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে।

সরকার প্রস্তুতি কী নিচ্ছে জানলে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাঠ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে বার্তা পৌঁছে গেছে। তারা প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর মাত্রা বুঝে যখন মহাবিপদ সংকেত হবে, তখন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ দেখে তাঁরা দেশের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে থাকেন। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড় কতটা শক্তিশালী হবে ও এর প্রভাব কতটুকু পড়বে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া যাবে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়ার পর।

এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির পর তা উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর অগ্রসর হবে। মঙ্গলবার ভোরের দিকে তিনকোনা দ্বীপ ও সন্দ্বীপের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে এ ঘূর্ণিঝড়।

এর প্রভাবে সোমবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হবে। সোমবার দুই ২৪ পরগনায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

দুই মেদিনীপুরে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলিসহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোতে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৎপর ভারতের প্রশাসন। দেশটির উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। সোম ও মঙ্গলবার সুন্দরবনে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতের দিঘা, মন্দারমণি ও শঙ্করপুরের মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে পর্যটকদের।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!