সৌম্য সরকার আর লিটন দাসের উইকেট শুরুতেই চাপে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। ১৮ রানেই সাজঘরে দুই ওপেনার। শুরুতেই চাপে বাংলাদেশ। সেখান থেকে অভিজ্ঞ যুগল সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহীমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ছিল টাইগাররা।
সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে ওঠে। দু’জন কিছুটা ধীর গতির ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে বিপর্যয়মুক্ত করার চেষ্টা করছিললেন; কিন্তু যেই না উইকেটে সেট হবে, অমনি আউট হয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। ২৮ বল খেলে মাত্র ২০ রান করলেন তিনি। রানের গতি বাড়াচ্ছিলেন আফিফ। তবে ১৮ রান করে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনিও। এরপর সোহান ও মাহমুদুল্লাহ ফেরেন।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় বাংলাদেশের রান ১৭ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান।
অফফর্ম থেকে বেরই হতে পারছেন না সৌম্য সরকার। একেকবার একেক পজিশনে খেলেও ভাগ্যবদল হচ্ছে না তার। এবার ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরের পথ ধরেছেন সৌম্য।
ফলে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খেয়েছে টাইগাররা। জশ ড্যাভেকে মিডউইকেটে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, ৫ বলে করেছেন ৫ রান।
এরপর লিটন দাসও হতাশ করেছেন। তারও সংগ্রহ মাত্র ৫ রান (৭ বলে)। ব্র্যাড হোয়েল স্লোয়ার বুঝতে না পেরে মিডঅফে ক্যাচ লিটন।
এর আগে মেহেদি-সাকিব-মোস্তাফিজদের তোপে ৯ উইকেটে ১৪০ রানেই থেমেছে স্কটল্যান্ড। আল আমেরাতে আজ টস ভাগ্য সহায় ছিল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। স্কটল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান তিনি। বাংলাদেশি বোলাররা অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেছেন শুরু থেকেই।
তাসকিন আহমেদকে দিয়ে বোলিং আক্রমণ শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ওভারে তাসকিন দেন ৪ রান। মোস্তাফিজুর রহমান পরের ওভারে আরও মিতব্যয়ী, খরচ করেন মাত্র ১ রান।
তৃতীয় ওভারে আবারও বোলার বদল। এবার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে আক্রমণে আনেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম তিন বল ডট দিয়ে চতুর্থ বলেই সাফল্য পান সাইফউদ্দিন। টাইগার পেসার পরিষ্কার বোল্ড করেছেন কাইল কোয়েতজারকে (৭ বলে ০)।
ক্রস খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন ম্যাথিউ ক্রস। ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে শেখ মাহেদি হাসান এলবিডব্লিউ করেছেন তাকে। এর তিন বল পর তিনি বোল্ড করেছেন ভয়ংকর জর্জ মুনসেকেও (২৩ বলে ২৯)।
ক্যাচ মিসে যেমন ম্যাচ মিস হয়, তেমন একটি ক্যাচ ম্যাচ ঘুরিয়েও দিতে পারে। আফিফ হোসেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নজর কাড়লেন দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে।
সাকিব আল হাসানকে স্কটিশ ব্যাটসম্যান স্কট বেরিংটন (৫ বলে ২) যেভাবে হাঁকিয়েছিলেন, তাতে বলটি ছক্কাই হতে পারতো। কিন্তু দারুণভাবে বাউন্ডারিতে সেটে ধরে ফেলেন আফিফ। পরে ভারসাম্য রাখতে না পেরে বল ওপরে তুলে চলে যান বাউন্ডারির বাইরে। সেখান থেকে এসে আবার দারুণভাবে লুফে নেন ক্যাচটি।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে জোড়া আঘাত হেনেছিলেন মেহেদি হাসান। সাকিব একাদশতম ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন। বেরিংটনের পর তাকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে লিটন দাসের ক্যাচ হন মাইকেল লিস্ক (০)।
পরের ওভারে আবার মেহেদি। এবার তাকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড কলাম ম্যাকলিওড (৫)। ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড।
সেখান থেকে মার্ক ওয়াট আর ক্রিস গিভসের প্রতিরোধ। টি-টোয়েন্টি মেজাজেই ব্যাটিং করেছেন দুজন। ৩৪ বলের জুটিতে যোগ করেন ৫১ রান।
শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারে এসে সেই জুটি ভেঙেছেন তাসকিন। ১৭ বলে ২২ করা ওয়াট বাউন্ডারিতে হয়েছেন সৌম্য সরকারের ক্যাচ।
তবে গ্রিভস ঠিকই মারকুটে ব্যাটিং করেছেন। ২৭ বলেই তিনি করেন ৪৫ রান। শেষ ওভারে এসে এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, বাউন্ডারিতে সাকিব নিয়েছেন ক্যাচ। পরের বলে আরও এক উইকেট কাটার মাস্টারের, বোল্ড করেছেন জশ ড্যাভেকে (৮)। তবে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেও তা হয়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন শেখ মেহেদি। ১৯ রানে ৩টি উইকেট নেন এই অফস্পিনার। ১৭ রানে সাকিবের শিকার ২ উইকেট। মোস্তাফিজ ২ উইকেট নিয়েছেন ৩২ রান খরচায়। একটি করে উইকেট শিকার তাসকিন আর সাইফউদ্দিনের।