খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

সাকিব নৈপুণ্যে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ২য় ওয়ানডেতে ৩ উইকেটে জয় পেয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পরাজয়ের শঙ্কা মাথা চাড়া দিয়েছিল। কিন্তু হাল ছাড়েননি সাকিব আল হাসান। শক্ত হাতে লড়াই চালিয়ে যান। প্রায় ২ বছর পর ওয়ানডে ফরম্যাটে সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন। তবে ৯৬ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন তিনি। সাকিব খানিক আক্ষেপে পুড়লেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয়ে পেয়েছে বাংলাদেশ দল।

ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি দীর্ঘ এক যুগ পর জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা। সঙ্গে ওয়ানডে সুপার লিগের মূল্যবান আরও ১০ পয়েন্ট পেয়ে গেল বাংলাদেশ। যার সবই আসলো সাকিবের হাত ধরে।

২০০৯ সালে শেষবার জিম্বাবুয়ে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ দল। ৫ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জয় করেছিল সফরকারীরা। এক যুগ পর জিম্বাবুয়েতে আবার সিরিজ জয় টাইগারদের।

সাকিবকে নিয়ে কানাঘুষা অনেকদিন ধরেই। চলতি বছরের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে সেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রানের দেখা পেয়েছিলেন সাকিব, এরপর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও নিজ ব্যাটে রান খরা কাটাতে পারছিলেন না। স্বীকৃত ক্রিকেটে কোনোভাবেই পঞ্চাশঊর্ধ্ব ইনিংস আসছিল না তার ব্যাটে। তবে যোদ্ধা সাকিবের প্রতি বিশ্বাস ছিল টাইগার টিম ম্যানেজমেন্টের। অধিনায়ক তামিম ইকবালও বলেছেন, খুব দ্রুত সাকিবে ব্যাটে রান দেখা যাবে।

অবশেষে সে দিনটি আসলো হারারেতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৪১ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে সতীর্থরা একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। তবে টলানো যায়নি সাকিবকে। সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও ১০৯ বলে খেলেন ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। যেখানে ৮টি চারের মারে এই ইনিংস সাজান তিনি। এর আগে বল হাতেও ২ উইকেট পান এই অলরাউন্ডার।

অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসাবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যখন ক্রিজে এলেন তখন পরাজয়ের প্রহর গুনছিল বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময়ই দিক হারিয়েছে টাইগারা। বড় শট খেলে চাপ কমানোর চেষ্টায় হাতছাড়া করেছে জয়। এদিন এমন কিছু হলো না সাকিবের জন্য। তরুণ সতীর্থকে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় অবিচ্ছেদ্য ৬৯ রানের চমৎকার এক জুটিতে দলকে নিয়ে গেলেন জয়ের বন্দরে।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু বাংলাদেশের। তামিম-লিটনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৯ রান। তবে এরপর ১০ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় সফরকারীরা। তামিম ২০ রান করে আউট হওয়ার পর একে একে ফিরে যান লিটন (২১) ও মিঠুন (২)। মোসাদ্দেকের সঙ্গে সাকিবের জুটি থামে ২৪ রানে। আগের ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ৫ রানে কাটা পড়েন তিনি। উইকেটে পিছনে বল যাওয়ায় দৌড়ে রান নিতে চেয়েছিলেন মোসাদ্দেক। তবে লক্ষ্যে পোঁছানোর আগে সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন চাকাভা।

এক প্রান্ত আগলে রেখে তিন নম্বরে নামা সাকিব দেখেছেন উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রদর্শনী। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে বিপর্যয় সামলানোর চেষ্টা করেন সাকিব। তবে খুব বেশি সুবিধা হয়নি। রিয়াদকে ২৬ রানে ফিরিয়ে সাকিবের সাথে ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন মুজারাবানি। পরে আফিফ হোসেন ও সাইফউদ্দিনকে নিয়ে জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন সাকিব। বীরোচিত এক ইনিংস খেলে নিজে অপরাজিত থাকেন ৯৬ রানে।

এর আগে হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ওপেনার টিনাশে কামুনহুকামউই। তাসকিনের বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১ রান করে। আরেক ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিও মেহেদী হাসান মিরাজের শিকারে পরিণত হন ১৩ রান করে। তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন রেগিস চাকাভা ও টেলর। চাকাভা ৩২ বলে ২৬ রান করে আউট হলে ভাঙে তাদের এই পার্টনারশিপ।

টেলর বড় রানের দিকে ছুটছিলেন, তবে বিস্ময়করভাবে আউট হন তিনি। শরীফুলের শর্ট বলে আপার কাট করতে চেয়েছিলেন। ব্যর্থ হলেন, এরপর ব্যাট নামিয়ে আনতে গিয়ে তা লাগল স্টাম্পে। ৪৬ রানে সাজঘরের পথ ধরলেন তিনি। এরপর মুজারাবানি দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। খেলেন ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সেরা ৫৬ রানের ইনিংস। সঙ্গে ডিওন মেয়ার্সের ৩৪ ও সিকান্দার রাজার ৩০ রানের কল্যাণে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৪০ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেসার শরিফুল ইসলাম একাই নেন ৪ উইকেট। একে একে ফেরান টেলর, মাধেভেরে, লুক জংওয়ে ও ব্লেসিং মুজারাবানিকে। স্পিনার সাকিব আল হাসান নেন ২ উইকেট। এছাড়াও মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১টি করে উইকেট পান।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!