খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদন স্থগিত
  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

সহস্রাধিক রুশ সৈন্য নিহত, দাবি ইউক্রেনের

আন্তর্জা‌তিক ডেস্ক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে শুরু হওয়া রাশিয়ার সবচেয়ে বড় আগ্রাসনের প্রথম দুই দিনে ১ হাজারের বেশি রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। শুক্রবার রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ঢুকে পড়ার পর এই দাবি করেছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে। রাশিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কোনো সশস্ত্র সংঘাতেই এত বেশি সৈন্যের প্রাণহানির শিকার হয়নি।

অন্যদিকে রয়টার্স বলেছে, সংঘর্ষে রাশিয়ার প্রায় ২ হাজার ৮০০ সৈন্য নিহত ও ৮০টি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালইয়ার।

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি। হান্না বলেছেন, রুশ সৈন্যরা আরও ৫১৬টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান, ১০টি বিমান এবং সাতটি হেলিকপ্টার হারিয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে এখন পর্যন্ত হতাহত কত?

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সৈন্যরা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছানোর কারণে দেশটিতে রাশিয়ার আক্রমণের চিত্র দ্রুত পাল্টে যেতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে ইউক্রেনে সংঘর্ষে হতাহতের অনেক পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। তবে সেসব পরিসংখ্যান নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এখন পর্যন্ত যা জানা গেল

• ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সংঘাতে রাশিয়ার এক হাজারের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে।

• ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীবিষয়ক মন্ত্রী জেমস হিপ্পি বলেছেন, রাশিয়ার ৪৫০ সৈন্য এবং ইউক্রেনের ৫৭ বেসামরিকসহ কমপক্ষে ১৯৪ সৈন্য নিহত হয়েছেন।

• অন্যদিকে, জাতিসংঘ বলেছে, ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৫ বেসামরিক নিহত এবং আরও ১০২ জন আহত হয়েছে।

• রাশিয়া বলেছে, রাজধানী কিয়েভের কাছের প্রধান হোসটোমেল বিমানবন্দর দখলের সময় ২০০ জনের বেশি ইউক্রেনীয় সৈন্যকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ছোট স্নেক আইল্যান্ডে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় ১৩ ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত হয়েছে।

• বৃহস্পতিবার ইউক্রেন জানায়, রাশিয়ার আগ্রাসনে ইউক্রেনের ৪০ জনের বেশি সৈন্য নিহত ও আরও কয়েক ডজন আহত হয়েছে।

কিয়েভ শহরের মেয়র বলেছেন, ইউক্রেনের রাজধানী এখন প্রতিরক্ষামূলক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের নির্দেশে অভিযান শুরুর পর বৃহস্পতিবারই রুশ সৈন্যরা কিয়েভের উপকণ্ঠে পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছানোর পর হেলিকপ্টার করে রাশিয়ার সৈন্যরা ওবোলোনস্কির কাছের একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।

এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করলেই কেবল কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় মস্কো প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নব্য-নাৎসিরা ইউক্রেন শাসন করুক মস্কো তা চায় না। শুক্রবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ সৈন্যদের প্রবেশের পর এসব কথা বলেছেন তিনি।

সের্গেই লাভরভ আরও দাবি করেছেন, রাশিয়া চায় ইউক্রেনের জনগণ স্বাধীন হোক এবং স্বাধীনভাবে তাদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ থাকুক। তবে প্রতিবেশী এই দেশটি নব্য-নাৎসিদের শাসনে চলুক সেটি ক্রেমলিন কখনই চায় না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

রাশিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে গণতান্ত্রিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না মস্কো।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর জেরে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এর জবাবে রাশিয়াও পাশ্চাত্যের দেশগুলোর ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে। শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমের দেশগুলোর উদ্দেশে এই সতর্কবার্তা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে পেসকভ আরও বলেন, ‘পাশ্চাত্যের দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া সমস্যায় পড়বে— এটি সত্য, কিন্তু সেসব সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না; কারণ গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়া বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাচ্ছে।’

২০১৪ সালে গণতন্ত্রপন্থী প্রতিবাদকারীদের আন্দোলনের মুখে রাশিয়া-সমর্থিত ইউক্রেনের সরকারের পতন ঘটে। এরপর সামরিক অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখলে নেয় রাশিয়া। একই সঙ্গে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর সাথে লড়াইরত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন জানায় মস্কো।

এর সাত বছর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে রুশ সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন। ইউক্রেনের বেশিরভাগ শহরে টানা হামলা, গোলাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর রাজধানী কিয়েভে পৌঁছেছে রুশ সৈন্যরা।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!