ক্যারিবিয়ানদের ১৪৯ রানের টার্গেট টাইগারদের জন্য মোটেই কঠিন ব্যাপার ছিলো না। তাই ইনিংসের শুরু থেকেই দুই ওপেনার দেখেশুনে প্রতিপক্ষের বোলারদের মোকাবেলা করে রানের চাকা ঘুরাতে থাকে। মাঝেমাধ্যে তাদের ব্যাট থেকে দুই একটি চারের মারও দেখতে পায় দর্শকরা। এভাবে ৫ ওভারে বাংলাদেশের এই ওপেনিং জুটির ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। তবে ৬ষ্ঠ ওভারে স্পিনার আকিল হুসেইনের বল লিটনের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে প্যাডে আঘাত করায় দলীয় ৩০ রানে জুটি ভাঙ্গে স্বাগতিকদের। ওপেনার লিটন ব্যক্তিগত ২২ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। ১০ ওভারে বাংলাদেশের লিটনের উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ ছিলো ৪১ রান। তামিম ১৫ রানে ব্যাট করছিলেন। উকেটে তামিমের সাথে জুটি বাধেন শান্ত ।
এর আগে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের গতি আর মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে কুপোকাত সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ৪৩.৪ ওভারে মাত্র ১৪৮ রানে সবকটি উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। সিরিজ নিশ্চিত করতে টাইগারদের প্রয়োজন ১৪৯ রান।
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সফরকারী উইন্ডিজ। ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে তারা। দলীয় ১০ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে ক্যারিবীয় ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিসের উইকেট শিকার করেন ‘দ্যা ফিজ’। তার বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন উইন্ডিজ ওপেনার। তার আগে ১৫ বলে মাত্র ৬ রান করেন অ্যামব্রিস।
এর আগে প্রথম ওয়ানডেতেও মোস্তাফিজের শিকার হন অ্যামব্রিস। সেই ম্যাচে ৭ রান করার সুযোগ পান ক্যারিবীয় এ ওপেনার।
এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া ওপেনার কেজর্ন ওটলিকে ২৬ রানে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৩৬ রানে ৪৪ বলে ২৬ রানে ফেরেন ক্যারিবীয় এ তরুণ ওপেনার। তার বিদায়ের পর মাত্র ৩ বলের ব্যবধানে মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত ডি সিলভা। ১ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যান সফরকারীরা।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই চতুর্থ বলে সাফল্য পান সাকিব আল হাসান। তার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আন্দ্রে ম্যাককার্থি। তার বিদায়ে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
দলের এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ে উইকেটে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই রানআউট কাইল মায়ার্স। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে হাল ধরতে পারেননি অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদও। সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেন মাত্র ১১ রান।
দলের এমন করুণ পরিণতি দেখে সাতে ব্যাটিংয়ে নামা এনকেরুমা বোনার স্কোর মোটাতাজা করতে গিয়ে পেসার হাসান মাহমুদের শিকার হন। দলীয় ৭১ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে করেন ২৫ বলে ২০ রান।
আট নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান রোভম্যান পাওয়েল। শেষ দিকে তার একার লড়াইয়ে ১৪৮ রান তুলতে সক্ষম হয় উইন্ডিজ। না হয় শতরানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ক্যারিবীয়দের। দলের হয়ে ৬৬ বলে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন পাওয়েল।
বাংলাদেশ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৩.৪ ওভারে ১০ উইকেটে ১৪৮ রান। রোভম্যান পাওয়েল ৪১, কেজর্ন ওটলি ২৪, এনকেরুমা ২০;
মিরাজ ৪/২৫, মোস্তাফিজ ২/১৫, সাকিব ২/৩০।