সরকারি দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার দুই প্রকৌশলী, একজন সার্ভেয়ার ও একজন অফিস সহকারি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘ইনস্টিটিউট অব সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিএসইবি)’। সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে মো. মোখলেসুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কয়রা উপজেলা আমাদী ইউনিয়নের সোনাখালী খালের বাৎসরিক ইজারা বন্দোবস্তের জন্য গত ৩ এপ্রিল খালটির সীমানা নির্ধারণকালে আমাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জুয়েল ও তার বাহিনীর হাতে মারপিটের শিকার হয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন, সার্ভেয়ার মো. আক্তারুজ্জামান ও অফিস সহকারী মো. রিয়াদ হোসেন। ইতোমধ্যে খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
মারপিটের শিকার আক্তারুজ্জামানের উদ্ধৃতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাৎসরিক ইজারা বন্দোবস্তের জন্য আমাদী ইউনিয়নের সোনাখালী খালে যাওয়ার পর ইউপি সদস্য মো. মঈনুল ইসলাম লিটন তাদের সুবিধা মতো স্থান থেকে খালের সীমানা নির্ধারণের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ সময় চেয়ারম্যান জুয়েলসহ উপস্থিত আরো কয়েকজন ইউপি সদস্য লিটনের পছন্দ অনুযায়ী স্থান থেকে সীমানা নির্ধারণের জন্য দেন-দরবার শুরু করে। তখন সরকারি কাজের সীমাবদ্ধতার কথা জানালে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান জুয়েল, ইউপি সদস্য লিটনসহ কয়েকজন হামলা চালায় এবং সার্ভেয়ার ও অফিস সহকারিকে বেধড়ক মারপিট করে। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ঠেকাতে গেলে দৃর্বৃত্তরা তাদের ওপর চড়াও হয়। ওই ঘটনায় আহত সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জামানকে খুলনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি কর্মচারিদের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের ওই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আইডিএসইবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনায় দেশের অবকাঠামো ও সার্বিক উন্নয়নে দেশব্যাপী প্রকৌশলী ও সার্ভেয়াররা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ও মাঠ পর্যায়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারা ভূমিকা রাখছে। এই কাজে যারা বাধা দেয়, তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে খুলনা জেলা প্রশাসক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে। দ্রুত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড