খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ মাঘ, ১৪৩১ | ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  সুইজারল্যান্ডে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ
  ইতালির রোম থেকে ছেড়ে আসা বিমানের একটি ফ্লাইটে বোমাতঙ্ক, নিরাপদে অবতরণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে

সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস বন্ধ

গেজেট ডেস্ক

মহেশখালীর গভীর সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরীক্ষামূলক খালাস কার্যক্রম সফল হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে তেল খালাস শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এ সেক্টরে নতুন যুগে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু তিন দিনের মাথায় পাইপলাইনের ক্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় বহুল প্রতীক্ষিত এই তেল খালাস কার্যক্রম।

তেল খালাস বন্ধ হওয়ার কারণ জানিয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো গত সোমবার সরাসরি জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশ দিয় তেল খালাস শুরু হয়। তিন দিনের মাথায় পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে খালাস বন্ধ হয়ে যায়। যা পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়নি।

মো. লোকমান আরও বলেন, পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পর সাত থেকে ৮ হাজার টন তেল পাইপলাইনে খালাস করা হয়েছিল। এরপর ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বাকি তেল আগের মতো লাইটারেজের মাধ্যমে খালাস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনা প্রতিষ্ঠান পাইপলাইনে কী ত্রুটি হয়েছে সেটি নির্ণয় করে সারানোর জন্য কাজ করছে।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জাহাজ থেকে খালাস হওয়া তেলের চাপে ফুটো হয়ে যায় পাইপলাইন। পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে এমনটাই হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পাইপলাইন বেয়ে বেশ কিছু তেল সাগরেও মিশেছে। যে কারণে তড়িগড়ি করে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ২৪ জুন রাতে সৌদি আরব থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল নিয়ে এমটি হোরাই মহেশখালী গভীর সমুদ্রে পৌঁছায়। এর পরদিন জাহাজটি থেকে পরীক্ষামূলক পাইপলাইনে তেল খালাস কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল।

তবে ওই সময় বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ৩ জুলাই সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) সঙ্গে সৌদি আরব থেকে আসা জাহাজের সংযোগ ঘটানো হয়। এর মধ্য দিয়ে জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ নতুন দিগন্তে প্রবেশ করে বলেও দাবি করেছিলেন ইআরএল কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জাহাজ এমটি হোরে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল (ক্রুড অয়েল) নিয়ে সৌদি আরব থেকে ২৪ জুন মাতারবাড়িতে পৌঁছে।

বৃহদাকার অয়েল ট্যাঙ্কারটি ২২৯ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ১২ মিটার ড্রাফটের। ২৫ জুন তেল খালাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২৮ জুন পর্যন্ত কমিশনিং কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।

এরপর রোববার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় দফায় কমিশনিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরদিন সোমবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে মাদার ভেসেল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল সাংবাদিকদের বলেন, অনেক উন্নত দেশকে টেক্কা দিয়ে গভীর সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ক্রুটি সেরে এটি আবার চালু করা হবে।

প্রকল্প সম্পর্কে জানা গেছে, মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে উপকূল থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) স্থাপন করা হয়েছে।

এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোডিং করা হবে। ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেই পাইপলাইন প্রথমে তেল নিয়ে আসা হবে কালারমারছড়ার সোনারপাড়া সিএসটিএফ বা পাম্প স্টেশন অ্যান্ড ট্যাঙ্ক ফার্মে। পাইপলাইন কমিশনিং করার পর সেখানে থাকা হেজ, সার্কিট বাল্ব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

এরপর স্টোরেজ থেকে বিভিন্ন পাম্পের মাধ্যমে ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল চলে যাবে আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূলে। সেখান থেকে আবার ৩৬ কিলোমিটার পাইপলাইন পাড়ি দিয়ে তেল নিয়ে যাওয়া হবে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির স্টোরেজ ট্যাঙ্কে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!