রাজধানীতে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে রাজধানীতে পৃথক স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৪ আগস্ট) দুপুরে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করে দলটির নেতাকর্মীরা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের মজলিসে শূরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন জানান, আজ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে মতিঝিলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে মতিঝিল থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলওয়ার হোসাইন, কামাল হোসাইন, ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, মাওলানা আবু ফাহিম, আবু সাদিক, আব্দুস সালাম, মোবারক হোসাইন, শেখ শরিফ উদ্দিন, আব্দুর রহমান, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি তাকরিম হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানার আমির ও সেক্রেটারিরা।
রাজধানীর মিরপুরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে অবিলম্বে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করে জনমত যাচাইয়ের আহ্বান জানান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার জানান, বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১নং থেকে শুরু হয়ে নগরী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যালে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীন, ও নাসির উদ্দীন প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ড. রেজাউল করিম বলেন, সরকারের নির্দেশে প্রশাসন আমাদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও সমাবেশ করা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু ফ্যাসিবাদী ও বাকশালী সরকার সে অধিকার থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করে দেশের শাসনতন্ত্র ও আইনের শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে এবং সংবিধানের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। তাই এই স্বৈরাচারী, জুলুমবাজ ও সংবিধান লঙ্ঘনকারী সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।
তিনি সরকারের পতনের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষ সবাইকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
ড. রেজাউল করিম বলেন, সরকার জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনসহ শীর্ষ নেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে। তারা চলমান সরকার পতনের আন্দোলনকে দমন করার জন্য হামলা, মামলা ও গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। বাড়ি-বাড়ি বেআইনি অভিযান চালিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে বিরোধী দলীয় সমর্থকদের। এজন্য মাঠে নামানো হয়েছে দলীয় হেলমেট বাহিনীকে। কিন্তু হামলা, মামলা ও গণগ্রেপ্তার চালিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না, বরং গণরোষে তাদের পতন অনিবার্য হয়ে উঠবে।
তিনি সরকারকে জিঘাংসার ও প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই এই দাবি পাশ কাটানোর কোনো সুযোগ নেই। আর দলীয় সরকারের অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ এই জুলুমবাজদের পতনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ।