বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সুশাসন ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাস করিনা বরং সংবিধান অনুযায়ি আমরা প্রত্যেকেই গর্বিত বাংলাদেশী নাগরিক। দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কোনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক শক্তিকে আস্থায় নিতে হবে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও পূঁজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় শত্রুদের চিহ্নিত করে সম্মিলিতভাবে তাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনাই ছিল সকল ক্ষেত্রে ন্যায়, ইনসাফ ও জাস্টিস প্রতিষ্ঠা। তাই এই চেতনা থেকে আমাদের পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সম্প্রীতিতে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। এখানে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। অধিকারের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই সমান। আমাদের সংবিধানও প্রতিটি নাগরিকের জন্য সে নিশ্চয়তা দিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। জামায়াত কোনো দিন ক্ষমতায় গেলে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবে।
তিনি বলেন, দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত নারীরা একাকী ভ্রমণ করলেও তাদের দিকে কেউ চোখ তুলবে না। এমনি একটি ইনসাফ ও ন্যায়বিচারপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াত দেশের বেকার সমস্যার সমাধান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা দেশের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ আমরা করি না বরং মানুষকে ভালোবেসেই আমরা আমাদের আদর্শের প্রচার ও প্রসার ঘটাতে চাই।
আওয়ামী ফ্যাসীবাদী আমলের দেশের লুটপাট, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা চাঁদাবাজী, ঘুষ, দখলদারি ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারাই জাতীয় শত্রু। জামায়াতের নেতা-কর্মী তো দূরের কথা কোনো সমর্থকের বিরুদ্ধে এ সব অপকর্মের কোনো অভিযোগ নেই বরং আমরা এ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে সব সময়ই সোচ্চার। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই জাতীয় শত্রুদেরকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবলা করতে হবে।
সভায় মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম ও পিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও পূঁজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে সত্যনন্দ দত্ত, ব্রজেল ঢালী, সুজনা জলি, তপন কুমার ঘোষ, উজ্জল দাস, নারায়ন মিশ্র, দেব প্রসাদ দেবু, বিশ্বজিৎ গোলদার, চন্দ্রজিদ বৈরাগী, চিন্নয় রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এমএম