খুলনায় পাইকারী বাজার কেসিসি পরিচালিত সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনাল। সেখানে খুলনাসহ আশপাশ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ধরণের কাঁচা তরিতরকারি আসে। এখান থেকে খুলনাসহ আশপাশ জেলার বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হয় শাক-সবজি। এসব পণ্য পাইকার থেকে খুচরায় হাত বদলে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, ট্রাক ট্রার্মিনালে দুই ধাপে কাঁচা তরিতরকারি আসে। ভোর থেকে রাত অবধি এখানে কাঁচা পণ্য কেনা-বেচা হয়ে থাকে। এখানে যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও খুলনার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কাঁচা পণ্য আসে। প্রতিদিনই কৃষকের মাঠ থেকে শীতকালীন সবজি বাজারে আসছে। বাহারি সব শাক-সবজিতে সেজে উঠেছে শহরের বাজারগুলো। কৃষকের উৎপাদিত এ সকল পণ্য ভোক্তা পর্যন্ত আসতে পাইকারী তিনহাত বদল হয়। বদলের ফলে বেড়ে যায় এ সকল পণ্যমূল্য। কৃষকের কাছ থেকে ব্যাপারী আর ব্যাপারী থেকে পাইকার, সর্বশেষ খুচরা দোকানীর কাছে পৌঁছায় এসব কাঁচা পণ্য।
পাইকারী বাজারের বিভিন্ন আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি প্রতি কেজি ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, ওলকপি ৮-৯ টাকা, মূলা ৪-৫ টাকা, পেঁয়াজের কালি ১০ টাকা, পালংশাক ৮ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, টমেটো মানভেদে ২৮-৪৫ টাকা, মটরশুটি ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৫ টাকা ও খেরাই ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে হাত বদলেই দ্বিগুণ ও তিনগুণ দামে তা বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ওলকপি ২৫-৩০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৩০ টাকা, পালং ও লাল শাক যথাক্রমে ২০-২৫ টাকা, টমাটো ৬০ টাকা, মটরশুটি ১২০ টাকা, খেরাই ৬০ টাকা ও ধনেপাতা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, এ বাজারে কৃষকের মাঠ থেকে কাঁচা পণ্যটি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে তিন হাত বদল হয়। ব্যাপারীরা আমাদের ঘর ব্যবহার করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি কেজিতে আমরা পাইকারদের কাছে ১ টাকা আড়ৎদারি নিয়ে থাকি। তারা বাইরে বেশী দামে বিক্রি করলে আমাদের কিছু করার নেই।
নগরীর ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শহীদুল বলেন, বাজারের সেরা মাল ক্রয় করে আমরা এখানে নিয়ে আসি। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। সবকিছু মেইনটেইন করে আমাদের এই দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারে কথা হয় আলী আহমদের সাথে। আগে তিনি নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে কাঁচামাল ক্রয় করতেন। সেখানে দাম বেশী রাখার বিষয়টি আচ করতে পেরে তিনি এ বাজার থেকে মালামাল ক্রয় করেন। বাজার তদারকির ব্যবস্থায় চরম অবহেলার কারণে আজ এ অবস্থায় পৌছেছে।
গোলাম ছামদানি সাকিব বলেন, এটা বড় ধরণের পুকুর চুরি। যাদের দেখার তার বিষয়টি দেখেন না। দেখলে আজ এ অবস্থা হতো না। আমাদের তো কিনে খাওয়ার ক্ষমতা আছে। আর যাদের নেই, তাদের কি অবস্থা?
খুলনা গেজেট/ এসজেড