৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে দিনটি ধুমধাম করে পালন করা হয়। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা, ভালবাসা প্রকাশ করে এই দিনটিকে পালন করা হয়। মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালিত হয় দিনটি।
১৯০৯ সালে প্রথম পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারী দিবসের রঙ নির্ধারিত রয়েছে বেগুনি ও সাদা। এ দুটি রঙ নির্দেশ করে সুবিচার ও মর্যাদা, যা দৃঢ়ভাবে নারীর সমতায়ন।
নারী দিবস পালনের পটভূমি হচ্ছে, এই দিনে আমেরিকায় ঘটে যাওয়া এক আন্দোলন। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সূতা কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। সেদিন বেতন বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, আর কাজের বৈরি পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নারীরা একজোট হলে তাদের ওপর কারখানা মালিকরা আর মদদপুষ্ট প্রশাসন দমন-পীড়ন চালায়।
প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৯০৮ সালে জার্মানিতে এ দিনটি স্মরণে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছিলেন।
এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো প্রতি বছরের ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হয়।
১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ডড়সবহ’ং উধু) হিসেবে পালনের আহ্বান করলে এর পর থেকে বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
যদিও আজকের দিনে নারী বলে তাঁদের জন্য আলাদা কোনও দিনের প্রয়োজন নেই। কারণ তাঁরা যে স্বয়ংসিদ্ধা। তাঁরা এখন কারও উপরে নির্ভরশীল নয়। উল্টো তাঁদের উপরই দাঁড়িয়ে আছে পরিবার। আবার কখনও তাঁদের উপরেই নির্ভর করছে কোনও দেশের ভাগ্য বা কোম্পানির ভবিষ্যৎ।
নারীদের এই অগ্রযাত্রায় আমাদের দেশে সকল স্তরের নারীরা নিজেদের পরিবর্তন শুরু করেছে। উদ্যোক্তা, ব্যবসা, সাংবাদিকতাসহ সকল চ্যালেঞ্জিং কাজেই নারী আজ জয়িতা। চাকরি হচ্ছে না তাতে কি ? মেধা আর শখের সমন্বয়ে হয়ে উঠছে উদ্যোক্তা। কখনো বা ছোট পরিসরে ব্যবসা, আর সেখান হতেই নিজের অবস্থান মজবুত। তাই নারীদের মূলমন্ত্র এখন ‘আমরা নারী, যেকোন কাজ আমরাও পারি।’
খুলনা গেজেট/এমএম