বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে তেরখাদা উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্প ‘ হাড়িখালী আবাসন’। ফলে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে পরিবারগুলো। অসহনী দুর্ভোগ সহ্য করতে না পেরে আবাসন ছেড়ে অন্য জায়গায় ঠাঁই নিয়েছে অনেক পরিবার। টানা ২২ বছর অতিবাহিত হলেও নেওয়া হয়নি সংস্কারের উদ্যোগ। কিন্তু অন্য কোথাও বসবাসের সুযোগ না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ফুটো-ফাটা মরিচা ধরা টিনের চালে পলিথিন দিয়ে দিন পার করছেন অসহায় বাসিন্দরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বসত ঘর সারাবছর স্যাতস্যেতে থাকে। চালের টিন ভেঙ্গে পড়েছে। পিলার খসে পড়ছে। আর বেড়া দিয়ে প্রতিনিয়ত বাতাস ঢোকে। ফলে ঘর গুলো বসবাসের একদম অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু জলাবদ্ধা আর জরাজীর্ণ ঘরবাড়ি নয়। পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে প্রকল্প ছেড়েছে বেশিরভাগ পরিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হত-দরিদ্র ভূমিহীন-ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের জন্য ২০০২ সালে আশ্রয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করে সরকার। ওই প্রকল্পের আওতায় তেরখাদার হাড়িখালিতে একটি প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। ওই প্রকল্পে ২৪ টি টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। এসব ঘরে ২৪০ টি ছিন্নমূল ও হত-দরিদ্র পরিবারের লোকজন বসবাসের সুবিধা আছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় টিনের ঘরগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। টিনের বেড়া এবং উপরের চালের অবস্থা জরাজীর্ণ।
প্রকল্পটি বর্তমান বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। ফলে এসব ইউনিটের বাসিন্দারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। বেশিরভাগ ইউনিট খালি হয়ে পড়েছে। আর যারা বসবাস করছেন তারা অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছেন।আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসকারীদের পয়নিষ্কাশনের জন্য নির্মাণ করা হয় ২৪ টি বাথরুম। এদের পানীয় জলের অভাব দুর করার জন্য প্রকল্পের সুবিধা মত স্থানে স্থাপন করা হয় ১১ টি টিউবয়েল এবং গোসল, থালা বাসন, কাপড় চোপড় ধোয়া মোছার জন্য ১১ টি পুকুরও খনন করা হয়। ভুমিহীন পরিবারের সন্তানদের বিকেলে খেলাধুলা চলাফেরা ও চিত্ত বিনোদনের জন্য কয়েকটি মাঠ রাখা হয়। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় দক্ষিন পাশের ঘরগুলোতে বসবাকরাী পরিবারের সদস্যদের। বৃষ্টির সময় এসব ঘরে হাটু পানি জমে যায়। সব মিলিয়ে এখানে বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, প্রকল্পে ইউনিট গুলো বসবাসের উপযোগী না। প্রকল্প এলাকার আশপাশে কোন হাট-বাজার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। আবার নিরাপত্তার অভাব থাকায় অনেকেই চলে গেছেন।
তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফা বেগম নেলী বলেন, বসবাসের অনুপযোগী ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকাসহ নানা অসুবিধার কারনে কিছু পরিবার প্রকল্প ছাড়ছে। আবার অনেক পরিবার বাড়ি নির্মাণ করেছে। তবে বর্তমানে বেহাল ইউনিটগুলো মেরামতের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম