খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

‘সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন হাজি সেলিম’

গেজেট ডেস্ক

হাজী মো. সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল থাকায় তিনি সাংবিধানিকভাবে সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তবে হাজী সেলিমের আইনজীবীর মতে, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল থাকার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন তাঁরা।

খুরশিদ আলম খান বলেন, সংবিধানের ৬৬ (২ এর ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে যদি কেউ নৈতিক স্খলনের দায়ে দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন তাহলে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে অযোগ্য হবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, হাজী সেলিম যেহেতু দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তাই এটা তাঁর নৈতিক স্খলন হয়েছে। তাই সাংবিধানিকভাবে তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাঁর সংসদ সদস্য পদ বাদ হয়ে যাবে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। হাইকোর্টের রায় পাওয়ার পর দুদকের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

রায়ের বিষয়ে খুরশিদ আলম খান বলেন, দুদক আইনে (২৬ এর ২ ধারা) করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় হাজী সেলিমকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কিন্তু দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে হাজী সেলিমকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। ওই সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারিক আদালত যেদিন হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাবে সেদিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বলা হয়েছে। যেসব সম্পত্তি নিয়ে এ সাজা প্রদান করা হয়েছে তা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

অপরদিকে হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেছেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না।

২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদক মামলা করে। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর ও তথ্য গোপনের দায়ে তিন বছরসহ মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তাঁর সাজা বাতিল করেন।

পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

এর পর গত বছরের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন উচ্চ আদালত। সে আদেশ অনুসারে নথি আসার পর আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। গত ৩১ জানুয়ারি এই মামলায় পুনরায় শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আজকে রায়ের দিন ধার্য করা হয়।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!