খুলনা, বাংলাদেশ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দল ও ধর্মের ভিত্তিতে দেশে কোনো বৈষম্য চায় না জামায়াত
  ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প

সংশোধন হচ্ছে ওয়াসা আইন, বিনা নোটিশে এমডিকে অপসারণ করা যাবে

গেজেট ডেস্ক

দেশে বিশেষ পরিস্থিতিতে কিংবা জনস্বার্থে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) অন্য কোনো কর্মকর্তাকে অপসারণ করে ওই সব পদে নতুন নিয়োগ এবং ওয়াসার বোর্ড বাতিলের ক্ষমতা রেখে ‘পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করতে যাচ্ছে সরকার। আইনের প্রস্তাবিত খসড়ার বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে গত ৩ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ওই অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়। পর্যবেক্ষণ শেষে শিগগিরই অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে জারি করা হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র বলছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট ওয়াসার কার্যক্রম ‘পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬’ এবং এই আইনের আওতায় প্রণীত বিভিন্ন বিধি দ্বারা পরিচালিত হয়।

এ ছাড়া দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ এই আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৫ আগস্ট ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন ঢাকা ওয়াসার আলোচিত এমডি তাকসিম এ খান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় তাকসিম এ খান ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে প্রথম দায়িত্ব পান। এরপর ক্রমাগত বাড়ানো হতে থাকে তাঁর মেয়াদ।

সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে সপ্তমবারের মতো আবারও তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর তাকসিম এ খান আর নিজ কার্যালয়ে যাননি। এ কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে ওয়াসার নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে জনস্বার্থে এই আইনের কয়েকটি সংশোধন জরুরি হয়ে পড়ে। ফলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করা হয়।

সূত্র আরো জানায়, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে তিনটি ধারা এবং একটি উপধারা যোগ করা হয়েছে। ধারা ২৮-এর (ক)তে বলা হয়েছে, অত্যাবশ্যক বিবেচনায় জনস্বার্থে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার যেকোনো ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণ ও নিয়োগ করতে পারবে। একইভাবে ৩০-এর (ক)তে বলা হয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতি বা অত্যাবশ্যক বিবেচনায় জনস্বার্থে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার যেকোনো ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অপসারণ ও নিয়োগ করতে পারবে। এ ছাড়া ধারা ৪২-এর (ক)তে বলা হয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতি বা অত্যাবশ্যক বিবেচনায় জনস্বার্থে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই সরকার যেকোনো ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বোর্ড বাতিল করতে পারবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আইনটি কার্যকর হলে দেশের শহরাঞ্চলের পানি সরবরাহ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।

এত দিন পরিচালনা বোর্ড বিদ্যমান আইনে ওয়াসাগুলো নিয়ন্ত্রণ করত। পরিচালনা বোর্ডই এসব কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি অনুমোদন করত। এ কারণে সেবাধর্মী এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বোর্ডের প্রভাবশালী সদস্যদের ‘ম্যানেজ’ করে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তেন। দোষী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় কিংবা বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যেত না। এমনকি ঢাকা ওয়াসার এমডি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পর্যন্ত পাত্তা দিতেন না। বলা চলে, ঢাকাসহ দেশের সব কটি ওয়াসা কর্তৃপক্ষের ওপর মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আইনটি কার্যকর হলে এমডিসহ যেকোনো পদের কর্মকর্তা-কর্মচারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন। আশা করা হচ্ছে, এতে সিবিএর দৌরাত্ম্য কমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!