সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এক সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বংশীপুর বাসস্ট্যান্ডে থেমে থেমে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারী শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থী শোকর আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুর রহমান সাদেমের কর্মীসমর্থকরা মিছিল বের করে। বংশীপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মিছিল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পরস্পরকে অতিক্রমের সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় দুই পক্ষই একে অপরের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের শতাধিক কর্মী সমর্থক বংশীপুর বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়ে পরস্পরের উপর ইট-পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। খবর পেয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষ থেকে নিবৃত্ত করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এতে আজিজুর ও সোহাগসহ উভয়পক্ষের ১০-১২ জন রাবার বুলেট বিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে বলে উভয় পক্ষ দাবি করেছে।
আহতদের মধ্যে সোহাগ, হাবিবুর, সাদ্দাম, মিস্টার, আব্দুল কাদের, মিজানুর, ফারুকসহ অন্তত ২২জনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের সাদিকুর রহমান সাদ্দামের ভাই আবদুল ওহাব জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শোকর আলীর লোকজন। এসময় সাদিকুর রহমানের ২৫-৩০ জন কর্মী-সমর্থক গুরুতর আহত হয় বলেও তিনি দাবি করেন।
এদিকে নৌকার প্রার্থী জিএম শোকর আলীর কর্মী হাবিবুর রহমান জানান, সাদিকুর রহমানের কর্মী-সমর্থকরা কোন উস্কানি ছাড়াই তাদের নির্বাচন অফিসে হামলা চালায়। প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তাদের অন্তত ৩০ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার তরিকুল ইসলাম জানান, আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, রাবার বুলেট বিদ্ধ কয়েকজনকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বংশীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তবে রাবার বুলেট ছোড়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়ে জানানোর কথা বলেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই