খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

শ্যামনগরের সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সাবেক ও বর্তমান ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আব্দুল কাদের শেখ (৩৬) নামের আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে শনিবার (৭ জুলাই) ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এনিয়ে এঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হলো। শুক্রবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে শ্যামনগরের রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল কাদের শেখ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামের মৃত সাকাত আলী শেখের ছেলে। এর আগে শুক্রবার রাতে মারা যান আমির আলী (২৮) নামের এক যুবক। তিনি একই গ্রামের আবুল হোসেন গাজীর ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারীর সমর্থক নাদের আলীকে মারধর করে বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লাল্টুর লোকজন। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুল বারীর কর্মী সমর্থকরা আব্দুল হামিদ লাল্টুর লোকজনকে গালিগালাজ করে। এসময় দু’পক্ষ বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে আব্দুল হামিদ লাল্টুর ছেলে মোখলেছুর রহমান মিলন, মেহেদি হাসান ও ভাই আনিছুর রহমানসহ ৩০-৩৫ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে সেখানে অবস্থানরত আব্দুল বারীর কয়েকজন সমর্থককে কুপিয়ে আহত করে। প্রায় ঘন্টাব্যাপি চলে এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতদের মধ্যে (৩৬), আব্দুল হানান (৪০), ইব্রাহিম গাজী (৩০), আক্তার হোসেন (৩১), ইসমাইল হোসেন (৩৪), ইমাম আলী (২৭), নাছির উদ্দীন (২৮), সোবহান মোল্যা (৩৮), আব্দুস সাদেক (৪১), আলাউদ্দীন (২৭), মেহেদী হাসান বাবু (২৩), আব্দুল আজিজ (৫০), সিরাজ হোসেন (৪০), হাফিজুর রহমান, (৪০), মুকুল মোল্যা (৩৮) ও ফারুক গাজী (২৭)সহ ১৭ জনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।

 

এদিকে, সংঘর্ষের সময় আহতদের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স নেয়ার পর চিকিৎসকরা আব্দুল বারীর ভাতিজা টেংরাখালী গ্রামের আবুল হোসেন গাজীর ছেলে আমির আলীকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সাকাত আলী শেখের ছেলে আব্দুল কাদের শেখ(৩৬) ও আব্দুস সোবহান (৫০)কে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে পথে মারা যান আব্দুল কাদের।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানার জন্য আব্দুল হামিদ লাল্টুর ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভাই পরিচয়ে এক ব্যক্তি দাবি করেন, মেম্বরকে মারতে বারী লোকজন নিয়ে এসেছিল। এখবরে গ্রামবাসী বাইরে বের হয়ে এসে বারীর লোকজনের নিয়ে আসা লাঠিসোটা দিয়ে তাদেরকে পিটিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়।

সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল বারী জানান, বিনা উস্কানীতে লাল্টু মেম্বর ও তার ছেলেদের নেতৃত্বে তার লোকজনের উপর হামলা করা হয়। সুন্দরবনের আত্মসমর্পণকারী কয়েকজন বনদস্যুকে নিয়ে লাল্টু তার লোকজনের উপর হামলা করে দাবি করে তিনি বলেন, আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথেও তার লোকজনকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার ১৬ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। নিহত আমির আলী তার ভাইপো আব্দুল কাদের শেখ তার লোক বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাড়ীর ইনচার্জ তারক বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থল পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, টেংরাখালী গ্রামে সাবেক ও বর্তমান মেম্বররের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত দুজনই বারী মেম্বরের লোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!