খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনীতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটী টুঙ্গিপাড়া এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর অধীনে ৫নং পোল্ডারের পশ্চিম দূর্গাবাটি এলাকায় প্রায় আশি ফুট জায়গা খোলপেটুয়া নদীতে ধ্বসে গেছে। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নদীতে ভাটা শুরু হওয়ার পরপরই ওই ঘটনা ঘটে। বাঁধের ধ্বস ক্রমশঃ তীব্র আকার ধারণ করায় আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারি সাধারণ জনগণ।

এদিকে শ্যামনগর উপজেলাকে ঘিরে থাকা উপকূল রক্ষা বাঁধের পশ্চিম দূর্গাবাটি এলাকায় ধ্বস লাগার খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দিনের শেষ ভাটায় আরো মারাত্মক কিছু ঘটনার আশঙ্কায় পাউবো’র সহায়তা নিয়ে স্থানীয়রা সকাল থেকে ভাঙ্গন কবলিত অংশের বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করতে থাকেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর অধীনে ৫ নম্বর পোল্ডারের দুর্গাবাটি ও পোড়াকাটলা এলাকার বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গন মুখে রয়েছে। একাধিকবার জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ জিও ব্যাগ প্লেসিং সত্ত্বেও ওই অংশের নদীর চর আগে থেকে দেবে যাওয়ার সেখানে ভাঙ্গন নিত্যকার বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ওই এলাকা থেকে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ড্রেজিং মেশিনের সহায়তায় লক্ষ লক্ষ ঘনফুট বালু উত্তোলনের কারণে সমগ্র এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন পাউবো কর্মকর্তারা মাপ জরিপ চালাচ্ছে। নামমাত্র কিছু কাজও হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বেড়িবাঁধের কাজ করতে গিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কাজ শেষ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও শাহনাজ পারভীন বলেন, শ্যামনগরে যে ২৩টি স্থানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, তা চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। যে জায়গাটি ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে সেটি জাইকার একটি উপ প্রকল্পের আওতাধীন ১০ কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে। টেন্ডার ওপেন হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। ঠিকাদার নিয়োগ হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, দাতিনাখালিতে আরও দুটি পয়েন্টের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে একটি পয়েন্টে কাজ শুরু হয়েছে।

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য ডালিম কুমার ঘরামি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় মানুষের। জনগণের জানমাল রক্ষায় উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত করার পরিকল্পনাটি আগে দরকার।

পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকার বাঁধের ভাঙ্গন নিয়ে পাউবো’র শ্যামনগর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে জিও ব্যাগে মাটি ভর্তি করে ভাঙ্গন কবলিত অংশে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। নদীর ওই অংশে স্কাউরিংয়ের মাত্রা বেশি হওয়ায় বার বার ওই এলাকা ভাঙ্গছে বলেও তিনি দাবি করেন।

এলাকা পরিদর্শন করে শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পাউবো’র তত্ত্বাবধায়নে বিকল্প রিং বাঁধ দেওয়া হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!