শ্বাসরুদ্ধকর ময়াচে বাংলাদেশকে চার উইকেটে পারিয়েছে পাকিস্তান। কষ্টার্জিত এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারী দল।
মিরপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে সাইফ হাসানের। যদিও নাঈম শেখের সাথে ওপেনিংয়ে নেমে ভালো করতে পারেননি।
নাঈমকে (৩ বলে ১ রান) হারিয়েই উইকেট পতনের শুরু হয়। পাওয়ারপ্লেতে টাইগাররা সাইফের (৮ বলে ১ রান) সাথে হারায় দীর্ঘদিন পর একাদশে ফেরা নাজমুল হোসেন শান্তকে (১৪ বলে ৭ রান)। এরপর দলের হাল ধরেন চারে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব।
তবে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জ্বলে উঠতে পারেননি। ১১ বলে ৬ রান করে তিনি বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তখন অন্য প্রান্তে দৃঢ়তা দেখান নুরুল হাসান সোহান।
৪০ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো বাংলাদেশ রান তুলছিল ধীরগতিতে। দলীয় ৬১ রানে সাজঘরে ফেরেন আফিফও। তার আগে ৩৪ বলের মোকাবেলায় করেন ৩৬ রান, হাঁকান দুটি করে চার-ছক্কা।
এরপর সোহানের সাথে হাল ধরেন শেখ মেহেদী হাসান। দুটি ছক্কায় ২২ বলে ২৮ রান করে সোহান বিদায় নেন দলীয় সংগ্রহ তিন অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই। তবে মেহেদী শেষদিকে চাহিদা মিটিয়ে ব্যাট চালান। ২০ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।
এছাড়া স্বল্প সুযোগে ঝলক দেখিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ৩ বলের মোকাবেলায় একটি ছক্কায় ৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনিও। বাজে শুরুর পরও নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান দাঁড়ায় বাংলাদেশের সংগ্রহ।
পাকিস্তানের পক্ষে হাসান আলী তিনটি, মোহাম্মদ ওয়াসিম দুটি এবং মোহাম্মদ নাওয়াজ ও শাদাব খান একটি করে উইকেট শিকার করেন।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাকিস্তান ভালো শুরু পায়নি। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই টাইগাররা তুলে নেয় চার উইকেট। ২২ রানের মধ্যে দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজমকে হারায় পাকিস্তান। মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত দুই বলে দলের সেরা দুই ব্যাটার বোল্ড হলে দল চাপে পড়ে যায়।
দলীয় ২৩ রানে হায়দার আলী ও ২৪ রানে শোয়েব মালিক সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ চলে আসে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। মালিকের উইকেট ছিল বেশ চমক জাগানিয়া। নুরুল হাসান সোহানের বিচক্ষণতায় দারুণ থ্রোতে রানআউট হন হেয়ালি মালিক।
পাকিস্তানের রান-খরা অব্যাহত থাকে পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরও। তবে উইকেটে সেট হয়ে রানের গতি বাড়িয়ে তোলেন ফখর জামান। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন খুশদিল শাহ। ফখর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতেই তাকে শিকার করেন তাসকিন। বিদায়ের আগে ৩৬ বলে ৩৪ রান করেন ফখর, হাঁকান চারটি চার।
ফখর যখন সাজঘরে ফিরেছেন তখন ৩৪ বলে ৪৮ রান প্রয়োজন পাকিস্তানের, হাতে আছে ৫ উইকেট। ২৩ বলে ২৩ রান করে ক্রিজে ছিলেন খুশদিল শাহ। রানের জন্য সংগ্রাম করছিলেন তিনিও। তবে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তোলার আপ্রাণ চেষ্টাও অব্যাহত রাখেন।
তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৪ রান করা খুশদিলকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা দূর করার চেষ্টা করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। তবে শাদাব খান ও মোহাম্মদ নাওয়াজের ঝড়ো ব্যাটিং সব হিসাবনিকাশ ওলটপালট করে দেয়। মুস্তাফিজ ও শরিফুলের বিপক্ষে তাদের মারকুটে ব্যাটিং পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরায়।
লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে বোলিংয়ে আনা হয় ইনিংসের শেষ ওভারে। সেই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২ রান। ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন শাদাব। ১০ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৮ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নাওয়াজ। তাদের ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাকিস্তান পায় শ্বাসরুদ্ধকর জয়।
খুলনা গেজেট /এমএম