সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলা মামলায় আরো তিন জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত। মঙ্গলবার( ১ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে সাক্ষ্য এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এদিন সাক্ষ্যদেন তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত গাড়ি চালক শেখ নজিবুল্লাহ, সাতক্ষীরার সিনিয়র সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী ও দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমান। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ৩০ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত। এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে আগামী ৯ ডিসেম্বর।
অতিরিক্ত এর্টনি জেনারেল এস.এম মুনির জানান, রাষ্ট্র পক্ষকে সহায়তা দেয়ার জন্য তিনিসহ আরো ৩ জন সহকারী এর্টনি জেনারেল সাতক্ষীরাতে এসে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে সহায়তা করছেন। তিনি বলেন, এ মামলায় আজ তিন জন স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য গ্রহণকালে স্বাক্ষীরা সেদিনের গাড়ী বহরে হামলার ঘটনার উল্লেখ করে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই বর্বোরোচিত হামলা মামলায় আসামীরা যাতে কোনভাবে পার পেয়ে না যায় সে জন্য তারা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আগামী ২ মাসের মধ্যে এ মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে তিনি এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, কলারোয়ায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ধর্ষণের মামলাটিও পুনররুজ্জিবীত করতে এ মামলার নথিপত্র দেখেছি। ওই ধর্ষণ মামলাটিও পুনরজ্জিবীত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম।
সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আপীল আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চতর আদালত। এরপর রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট / এমএম