শীতের সকালে রোদে বসার আরামই আলাদা। খুব ঠান্ডা পড়লে বাড়ির বড়দের শিশুদের নিয়ে এভাবে রোদে বসার রীতি বেশ পুরনো। বাতের ব্যথা কমাতে এই পদ্ধতি অনেক কার্যকর। বর্তমান সময়ে এই চিত্র বদলে গেছে অনেকটাই। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এমন দৃশ্য কম খুবই দেখা যায়। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা—দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। তাই মানব শরীরে সূর্যালোকের উপস্থিতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। মন ভালো রাখতেও রোদের ভূমিকা রয়েছে। শারীরবৃত্তীয় কাজে হরমোন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হরমোনের ক্ষরণ এবং উৎপাদনের পিছনেও রোদ এবং অন্ধকারের আলাদা আলাদা ভূমিকা রয়েছে। পর্যাপ্ত রোদ গায়ে না লাগলে ‘সেরোটোনিন’ হরমোনের মাত্রা হ্রাস পায়। যা মানসিক চাপ, অবসাদের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। অনিদ্রাজনিত সমস্যাতেও হরমোনের প্রভাব রয়েছে।
শীতকালীন অবসাদ বেড়ে যাওয়ার পিছনেও রোদের ভূমিকা রয়েছে। রেটিনার মাধ্যমে সূর্যালোক শরীরে প্রবেশ করে। মস্তিষ্ক সেই সঙ্কেত পেলে ‘সেরোটোনিন’ হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। শীতকালে যেহেতু দিন ছোট, তাই রোদ বেশি ক্ষণস্থায়ী হয় না। রোদের তেজও কম থাকে। ফলে মন ভালো রাখার হরমোনের উৎপাদন বা ক্ষরণ কমে যায়। ফলে অবসাদের পরিমাণও বাড়ে। মারাত্মক অবসাদের চিকিৎসকায় তাই ‘লাইট থেরাপি’ বা ‘ফোটোথেরাপি’ বেশ কার্যকর।
এছাড়া শরীরে রোদের আরও যা যেসব ভূমিকা রয়েছে তা হলো-
১. সকালের রোদ গায়ে এসে পড়া মাত্রই দেহ তার নিজস্ব ঘড়ি মেনে সার্কাডিয়ান ছন্দে কাজ শুরু করে।
২. এই ছন্দে ব্যাঘাত ঘটলেই অবসাদ ডেকে আনে। এতে বিপাকহারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
৩. স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শরীরে ভিটামিন ডি-র মাত্রা বাড়িয়ে তোলা ছাড়াও মন ভাল রাখার ‘সেরোটোনিন’ হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
খুলনা গেজেট/এনএম