খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনায় মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে নিহত ২
  ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে গেছে : আইন উপদেষ্টা
'গুলি করে মেরে এখন আত্মরক্ষা বলছে বাহিনী'

শীতলকুচি-কাণ্ডে অমিতের ইস্তফা চাইছেন মমতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শীতলকুচির ঘটনায় দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপের পালা চলছেই। তার মধ্যে কড়া ভাষায় বিজেপি-কে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢাল করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে ভোটারদের গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। নিজেদের ভোটবাক্স ভর্তি করতে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করছে বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী। শুধু তাই নয়, বনগাঁ দক্ষিণের জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।

শনিবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে জোড়পাটকির একটি বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় দেশের সর্বত্র নিন্দা শুরু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ও বাদুড়িয়ার সভা থেকে তা নিয়ে মুখ খোলেন মমতাও। তিনি বলেন, ‘‘আমি বরাবর বলে আসছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী আমার শত্রু নয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় যে চক্রান্ত চলছে, তা আজ প্রমাণ হয়ে গেল। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের গুলি করে মেরে দেওয়া হয়েছে।’’

আত্মরক্ষার জন্যই শীতলকুচিতে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স (সিআইএসএফ) গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিজেপি নেতৃত্ব যদিও মমতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। কোচবিহারের সভায় তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরার পরামর্শ না দিলে, মানুষ উত্তেজিত হতেন না আর গুলিও চলত না বলে দাবি করেছেন তাঁরা। কিন্তু মমতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি জানে হেরে গিয়েছে। তাই ভোটারদের গুলি করে মারছে। তবু মানুষকে বলব, আপনারা শান্ত থাকুন। নির্বিঘ্নে ভোট দিন। কোনও অশান্তির মধ্যে যাবেন না। যারা অশান্তি করে, তারা রাক্ষসের দল। যারা শান্তি রক্ষা করে, তারা মানুষ। মানুষকে মানবিকতা দিয়েই জয় করতে হবে।’’

বাংলার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বরাবরই সরব মমতা। তারা বিজেপি-র কথা মতো কাজ করছে বলে তৃণমূলের তরফেও একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে। মমতার মুখও একই কথা শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘আজ শীতলকুচিতে ৪ জনকে গুলি করে মেরে দিয়েছে। সকালেও এক জন মারা গিয়েছে। এত ঔদ্ধত্য আসে কী ভাবে? কী অন্যায় করেছিল মানুষগুলো? তুমি চাও বিজেপি জিতুক। কিন্তু মানুষ কাকে ভোট দেবেন, তুমি ঠিক করার কে? অমিত শাহ কেন তাঁর এজেন্সিকে মেয়েদের ভয় দেখাতে বলে পাঠাবেন? গ্রামে, সীমান্ত অঞ্চলে গুলি করে মেরে দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। ভোটবাক্সেই এর বদলা নিতে হবে। নইলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে না।’’

শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা তত্ত্ব সামনে এসেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে সঙ্ঘাত চলছিল। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, তার মধ্যেই দলে দলে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময় বিনা প্ররোচনাতেই তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বুথে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। হাতে বা পায়ে গুলি না করে, সরাসরি বুকে গুলি করা হল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কিন্তু এ নির্বাচন কমিশনের পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের দাবি, ঝামেলা থামাতে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরে ১০০ থেকে ২০০ জন মানুষ। রাইফেল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। তাতেই আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় সিআইএসএফ। কিন্তু এর আগে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র হয়ে পক্ষপাতিত্ব করা বিবেকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘গুলি করে মেরে ফেলে আত্মরক্ষা বলছে এখন। লজ্জা হওয়া উচিত।’’

বাংলায় নির্বাচন ঘিরে হিংসার রেওয়াজ রয়েছে বলেই বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে বলে শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলের আমলে নির্বাচনী হিংসার প্রমাণ দিতে এর আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনের উদাহরণও দিতে দেখা যায় তাদের। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকে এই নির্বাচনে অনেক বেশি হানাহানি হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘চার দফা নির্বাচনে এখনও যে ১৮-২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার ১২ জন তৃণমূলের।’’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম  




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!