খুলনার পাইকগাছায় শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করলেই আকর্ষণীয় পুরস্কার পাচ্ছেন শিশুর পরিবার। জন্ম নিবন্ধনে উৎসাহিত করতে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। নির্বাহী অফিসারের এমন ঘোষণার পর এলাকায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে বলে জানা গেছে।
শিশু জন্মগ্রহণ করলে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলেও অনেক শিশুর পিতা-মাতা যথা সময়ে নিবন্ধন করে থাকেন না। অনেক পিতা-মাতার মধ্যে অনিহা দেখা যায়। ফলে পরবর্তীতে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে নানান জটিলতা সৃষ্টি হয়। শিশু জন্মের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় এ জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। তিনি নবজাতক শিশুর পিতা-মাতাদের জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহী করতে আকর্ষনীয় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করলেই আকর্ষনীয় পুরস্কার প্রদান করা হবে মর্মে ১ মাস আগে তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
ঘোষণার পর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। শিশু জন্মের পরপরই অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করছেন। ইতোপূর্বে যারা জন্ম নিবন্ধন করেননি তারাও নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করছেন বলে বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক শিশুর পিতা-মাতার হাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। প্রথম ধাপের পুরস্কার হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যক্তিগতভাবে শতাধিক শিশুর পিতা-মাতাকে টিফিন বক্স প্রদান করেন। আকর্ষণীয় এ পুরস্কার সরবরাহে এগিয়ে এসেছেন এলাকার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গুলো। দ্বিতীয় পর্যায়ের পুরস্কার হিসেবে ১শ প্লেট ও বাটি সরবরাহ করেছে উন্নয়ন সংস্থা সুশীলন। পুরস্কার হিসেবে প্লেট ও বাটি গুলো শুধু খাবারের পাত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য নয়। প্রতিটি প্লেট ও বাটিতে ছবি সম্বলিত প্রিন্ট করা রয়েছে পুষ্টিবার্তা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, জন্ম নিবন্ধন নিয়ে অনেকের মধ্যে অনিহা দেখা যায়। তারা যাতে উৎসাহিত হয় এজন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এটি খুব বড় ধরণের পুরস্কার না হলেও পুরস্কার হিসেবে যে প্লেট ও বাটি প্রদান করা হচ্ছে এর মাধ্যমে প্রতিটি শিশুর পিতা-মাতা শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে পারছে। শিশু জন্মের পর তার কি ধরণের পুষ্টি প্রয়োজন এ সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের কোন ধারণা নেই। প্রতিটি প্লেট ও বাটি বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে একটি শিশুর জন্মের পর হতে ২ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কি ধরণের খাবার প্রয়োজন তার ছবিসহ ছাপানো রয়েছে। অর্থাৎ পুরস্কারটি শুধু খাবারের পাত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। এটি পুষ্টি বার্তাও বহন করছে। জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহী করে তুলতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এমন নান্দনিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
খুলনা গেজেট/এনএম