স্ত্রী সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর শিশুসন্তানকে কাছে রাখতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন আল আমীন নামে (৪০) এক যুবক। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে বিষ পান করেন তিনি।
আল আমীন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল খানের বড় ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক পাস করেন।
জানা গেছে, আল আমীন একই উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে শিলাকে বিয়ে করেছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তাদের ঘরে আশরাফুল নামে দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে। তবে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানকে কাছে রাখতে না পারায় হতাশায় ভুগছিলেন আল আমীন। এ হতাশা থেকে বিষ পান করেন আল আমীন।
জানা যায়, বিষ পানের পর আল আমীনকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হলে সে মারা যায়।
এদিকে বিষ পান করার আগে আল আমীন তার ছোট ভাই মাহমুদকে উদ্দেশ্য করে একটি চিরকুট লিখে যান। চিরকুটের কথা হুবহু তুলে ধরা হলো- ভাই আমার জীবন আর চালাই নিতে পারছিনারে। প্রতিটি মুহূর্ত যন্ত্রণার। মাহমুদ অনেক ভালোবাসি ভাই তোকে। আমাকে মাফ করে দিস। আমার সংসারটা শিলার বাবা, মা আর ভাই নাহিদ নষ্ট করে দিছে। আমার কলিজার টুকরাকেও নিয়ে গেছে ওরা। ভাই প্রতিদিনের এই যন্ত্রণা, কষ্ট থেকে মুক্তির এটা ছাড়া উপায় ছিল না। ভাই আমার অসহায়ত্ব আর চোখের পানিও ওদের কাছে হাসি তামাশার মনে হয়েছে। ভাই বাবুকে দেখে রাখিস। আর পারলাম না ভাই। একটু একটু করে মরার চেয়ে একেবারে মরে যাওয়া ভালো। তাও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব। আব্বা-মাকে মাফ করে দিতে বইলো ভাই। আল আমীন ১৭/২/২২।
মাহমুদের চাচা আবুল খায়ের খান জানান, আল আমীনের সঙ্গে শিলার বিয়ের পর তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান হয়। কিন্তু সম্প্রতি তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদের সময় দুই বছরের ছেলে আশরাফুলকে স্ত্রী (শিলা) নিয়ে যায়। এ কারণে আল আমীন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি আত্মহত্যা। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে।