সড়কের দুই পাশে ড্রেন নির্মাণের প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ শেষ। এখন ধরা পড়েছে, যে জমিতে ড্রেন নির্মাণ হয়েছে, তার মালিক খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। মাপে সত্যতা মেলায় নতুন ড্রেনের বেশ কিছু অংশ ভাঙা শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে চলছে ড্রেন ভাঙার কাজ। এ দৃশ্য খুলনা শিপইয়ার্ড সড়কের। সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে গত ১১ বছর কাজ করছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। দুই দফা ব্যয় এবং কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে অর্ধেক কাজও শেষ করা যায়নি।
দীর্ঘ সময় কাজ শেষ না হওয়ায় শিপইয়ার্ড সড়ক চার লেন প্রকল্প নিয়ে একনেক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাজে গতি আনতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন তিন দফা খুলনায় এসেছেন। কিন্তু কিছুতেই কাজে গতি আসছে না। জমি নিয়ে দীর্ঘ জটিলতা এবং ঠিকাদারের গাফিলতিতে প্রকল্পটি এখন কেডিএর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেডিএ থেকে জানা গেছে, ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৩ সালের ৭ মে। তখন প্রকল্প ব্যয় ছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর পর ২০২০ সালের ২১ জুলাই প্রকল্প সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৯ কোটি টাকা।
প্রকল্পের আওতায় ৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৪ লেন সড়ক, দুই পাশে ড্রেনসহ ফুটপাত, সড়কের মাঝে দশমিক ৯২ মিটার ডিভাইডার নির্মাণ করা হবে। মূল রাস্তা, ডিভাইডার, ড্রেন ও ফুটপাত মিলিয়ে সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া হবে। প্রকল্পের আওতায় লবণচরায় নির্মাণ করা হবে ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু, মতিয়াখালীতে স্লুইসগেট ও কালভার্ট। সড়কটি আগের চেয়ে প্রায় ৩ ফুট উঁচু হবে।
সরেজমিন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের বেশির ভাগ অংশে ‘ইউ’ আকৃতির ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু শিপইয়ার্ড বিদ্যালয়ের পাশে প্রায় ৬০ মিটার নতুন ড্রেন ভাঙার কাজ করছেন শ্রমিকরা। ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা কেডিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
সংস্কার না করায় ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে চলতে হচ্ছে যাত্রীদের। ধুলায় নাকাল সড়কের আশপাশের দোকানপাট, বাসাবাড়ির বাসিন্দা। সড়কের প্রথম স্তরের কাজ শেষ হয়েছে। পাইলিংয়ের পর সেতু ও কালভার্টের কাজ
বন্ধ রয়েছে।
খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক মো. আরমান হোসেন জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ভুল
জমির নকশা দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরুর পর বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই অংশটুকু ভেঙে নতুন করে করা হবে। ওয়াসা ও বিটিসিএলের সড়ক খোঁড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
খুলনা গেজেট/এইচ