সুন্দরবন থেকে জোয়ারের সময় খালের পানিতে ভেসে এসেছে একটি মৃত ডলফিন (গাঙ্গেয় শুশুক)। শনিবার দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে অফিসের বিপরীত দিকে খালের পাড়ে গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুকটি (গ্যাংস রিভার ডলফিন) ভেসে আসে।
উদ্ধার হওয়া ডলফিন টি নারী, দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি। ওজন প্রায় ২০কেজি এবং মুখে ৭২টি দাঁত ছিল। বন বিভাগের কর্মীদের ধারণা, কমপক্ষে ৩ দিন আগে এটি মারা গেছে। তবে কী কারণে, বা কিভাবে প্রাণিটি মারা গেল সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি বন বিভাগ।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমনে ভারানির খালে শুশুকটি মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা বন বিভাগকে খবর দেয়। পরে তারা প্রাণিটিকে উদ্ধার করে বনের রেঞ্জ অফিসে নিয়ে মাটিচাপা দেয়।
ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) তালিকা অনুযায়ী, গাঙ্গেয় শুশুক বিপন্ন প্রজাতির একটি প্রাণী। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী একটি সংরক্ষিত প্রজাতির।
এরআগে গত ২৫ মে মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে জেলেদের জালে জড়িয়ে একটি ডলফিনের (শুশুক)মৃত্যু হয়। সুন্দরবনের পার্শবর্তি শরণখোলার ভোলা নদের চর থেকে গত ৩ মার্চ আরও একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে আমাদের রেঞ্জ অফিসের অপর প্রান্তে খুড়িয়াখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের শরণখোলা-বগী ভারাণী খালে মৃত শুশুকটিকে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা তাদের খবর দেয়। আমরা নারী শুশুকটিকে উদ্ধার করে মাটিচাপা দিয়েছি। তবে শুশুকটির শরীরে কোন আঘাত বা ক্ষতচিহ্ন ছিল না। বয়স প্রায় তিন বছর হবে। সুন্দরবন ছাড়াও পার্শবর্তি বলেশ্বর নদেও এই ধরণের ডলফিন দেখা যায়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার বিভাগীয় বন সংরক্ষক (ডিএফও) নির্মল কুমার পাল বলেন, গাঙ্গেয় শুশুক মূলত উপকূলীয় নদ-নদীর একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। সাধারণত এরা ২০ থেকে ২৫ বছর বাঁচে। ডলফিন গোত্রর এই প্রাণিগুলোর বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। কোন কোনটি ৫০ বছর ও তার বেশি বয়স পর্যন্ত বাঁচে। ডলফিনের স্বাভাবিক চলাচল ও নিরাপদ প্রজননের জন্য সুন্দরবনে কয়েকটি অভয়াশ্রম ঘোষণা করা আছে। এসব অভয়াশ্রমে মৎস্য আহরণ ও জলযান চলাচল নিষিদ্ধ। বনবিভাগের পাশাপাশি ডলফিন সংরক্ষণে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক একাধিক সংস্থা কাজ করছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই