নড়াইলের লোহাগড়ায় পাঁচ-ছয় মাস আগেও পাটকাঠি অবহেলা-অনাদরে পড়ে থাকতো গ্রামের পথে-ঘাটে বা বাড়ির আঙিনায়। সাধারণত লোকজন মাটির চুলায় রান্না আর পানের বরজের ছাউনি তৈরিতে ব্যবহার করতো পাটকাঠি। বর্তমানে বিভিন্ন কাজে বাণিজ্যিকভাবে এর চাহিদা বেড়েছে। ফলে বেড়ে গেছে পাটকাঠির কদর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার পাকা সড়ক, মাঠ-ঘাট যেখানে চোখ যায়, সেখানেই পাটকাঠি শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। অনেক চাষী এসব পাটকাঠি শুকিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রবীর কুমার দাস বলেন, এ বছর উপজেলায় ১২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ১ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত পাট থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়।
তিনি জানান, লোহাগড়ায় পানি সংকটের কারণে কৃষকরা উৎপাদিত পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়েন। পাটের রং ভালো না হওয়ায় বিক্রি করতে হচ্ছে কিছুটা কম দামে। কৃষক পাটকাঠিতে সেই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন। এখন চলছে পাটকাঠির পরিচর্যা ও কেনাবেচার কাজ। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কিনছেন এই রুপালি কাঠি। একশ আটি পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে ৬শ টাকায়।
লাহুড়িয়া গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, পাটকাঠি বিক্রিতে আমাদের আয় বেড়েছে। খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, পিরোজপুর থেকে অনেক ব্যবসায়ী পাটকাঠি কিনতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আসছেন।
রাজশাহীর পাটকাঠি ব্যবসায়ী ফরিদুজ্জামান বলেন, রাজশাহীতে পানের বরজে পাটকাঠির চাহিদা অনেক বেশি। তাই এখানে কম দামে পাটকাঠি পাওয়া যায় বলে প্রতি বছর আমরা এ উপজেলায় পাটকাঠি কিনতে আসি।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার জানান বলেন, পাটের পাশাপাশি লোহাগড়াতে পাটকাঠির চাহিদাও বেড়েছে। পাট দিয়ে নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি হচ্ছে। পাটকাঠি থেকে দাপ্তরিক সরঞ্জামাদিও তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া ঘর-গেরস্হালীর কাজে পাটকাঠির ব্যবহার দিনকে দিন বাড়ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে