ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে আসা আসামিদের কাছ থেকে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুরাতন কথাই তারা বার বলছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ।
এদিকে ১৩ দিনেও সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের লাশ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত লাশের কোনো অংশ উদ্ধার হয়নি। মরদেহ বা মরদেহের কোনো অংশ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
অপর দিকে কলকাতায় সিআইডির হেফাজতে থাকা জিহাদ হাওলাদারের দেওয়া তথ্যে শুক্রবার জিরানগাছা বাগজোলা খালে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি করা হয়। তবে লাশের কোনো চিহ্নও পাওয়া না যাওয়ায় গতকাল জাল ফেলে আবার তল্লাশি করা হয়।
এদিকে ঘটনা তদন্তে ঢাকায় আসা ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) চার সদস্য গতকালও মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তদন্ত–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এদিকে ঢাকা থেকে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল ঘটনা তদন্তে কলকাতায় যাচ্ছে। লাশ উদ্ধার এবং বাংলাদেশে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য নিয়ে সেখানকার পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবে। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওয়ারী বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান এই দলে নেই বলে জানা গেছে।
আট দিনের রিমান্ডে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ডিবি জানতে পেরেছে, আনোয়ারুলকে মিথ্যা কথা বলে ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তিনি সেখানে পৌঁছার আগেই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার আগে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করেন তিনি।
এই হত্যার পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা, টাকাপয়সা লেনদেন ও রাজনৈতিক বিষয় থাকতে পারে বলে মনে করছেন ডিবিপ্রধান। খুনের পেছনে স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট করে কোনো কিছুই বলা যাবে না। তবে অনেকগুলো বিষয় আছে।
ঝিনাইদহ–৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ১২ মে দর্শনা সীমান্ত হয়ে কলকাতায় যান। পরদিন কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে তিনি খুন হন। ২২ মে তাঁর খুন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুই দেশের পুলিশ। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি খুনের পর নেপালের কাঠমান্ডু হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান বলে পুলিশ বলছে। আরেক অভিযুক্ত সিয়ামের অবস্থানও নেপালে। তাঁকে ধরতে দুই দেশের পুলিশ কাজ করছে।
খুলনা গেজেট/এইচ