খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন দূতাবাসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
  ধর্মকে কেন্দ্র করে দেশে এমন উন্মাদনা দেখতে চাই না : মির্জা ফখরুল

র‌্যাগিংয়ের দায়ে যবিপ্রবির তিন শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

তদন্তে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থীকে বিশ^বিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের আল-আমিন, গণিত বিভাগের সোহেল রানা এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বারিউল হক মুবিন। তারা সবাই বিশ^বিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী।

শনিবার (২১ মে) দুপুরে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের ৭৮তম বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বোর্ডের সদস্যদের অনেকেই ভার্চ্যুয়ালিও যুক্ত থাকেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার হোসেন।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায়, বিভিন্ন বিভাগের আরও ১০ জন শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার মতো অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত থাকবে না উল্লেখ করে অভিভাবকের সম্মতিসহ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মুচলেকা না দিলে ওই শিক্ষার্থীদেরও এক বছরের জন্য বিশ^বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এই ১০জন শিক্ষার্থী হলেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাবুব হাসান রকি, রসায়ন বিভাগের শেখ জুবায়ের, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান রহমান রাব্বি, কেমিকৌশল (সিএইচই) বিভাগের পারভেজ মিয়া ও এসবি সানাউল্লাহ সাকিব, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) মোহাইমিনুল হক ও খালিদুজ্জামান সৌরভ, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগের রাফিউর রহমান অপূর্ব, কেমিকৌশল (সিএইচই) বিভাগের সালমান মোল্লা এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) সাইমুন নাইস।

তাদের মধ্যে প্রথম তিন জন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এবং বাকি সাতজন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। রিজেন্ট বোর্ডে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩২০ নম্বর কক্ষ হতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে ডেকে নিয়ে গণিত বিভাগের সোহেল রানা, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বারিউল হক মুবিন এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের আল-আমিন শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। যার ফলে সাব্বির আলম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

উল্লেখ্য, ওই কক্ষে উপস্থিত অন্য ১০-১৫ জন ছাত্র তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে। সাব্বির আলম জ্ঞান হারানোর পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করা হয় এবং ১ থেকে দেড় ঘণ্টা হাসপাতালে না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে যবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সযোগে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ওইদিন রাতে সাব্বির আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় ও পরদিন সকালে ১৮ এপ্রিল ২০২২ তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই হলে ফেরত নিয়ে আসা হয় এবং প্রশাসনের কাছে কোনোরূপ অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেয় হয়। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন, হুমকি প্রদান এবং আলামত লুকানোর চেষ্টার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় রিজেন্ট বোর্ড থেকে তাদেরকে এ শাস্তি প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে বিশ^বিদ্যালয়ের নার্সিং অ্যান্ড হেল্থ সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবু ইউসুফ মিয়া, যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন-৩) সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ডক্টর সলিমুল্লাহ, সাভারের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর এসএম আসাদুজ্জামান, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডক্টর কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, ইউজিসি অধ্যাপক ডক্টর শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার এমএ রশীদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর আহসান হাবীব প্রমুখ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!