কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাণহানির ঘটনার পর আন্দোলনকারী ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের নেত্রীরা৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সহযোগিতায় ১০ নেত্রীকে হল থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে৷ মঙ্গলবার রাত ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে৷
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি শেষে রাতে হলে ফিরে যান ছাত্রীরা৷ অপরদিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের সমাবেশ শেষে হলে ফেরেন ছাত্রলীগ নেত্রীরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা৷ তাঁদের তোপের মুখে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনসহ ১০ নেত্রীকে রাত ১২টার পর অ্যাম্বুলেন্সে করে হল থেকে করে নিয়ে আসে প্রক্টরিয়াল বডি৷
রাত একটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, রোকেয়া হল থেকে ১০ জন ছাত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ ভেতরে আটকে পড়া একজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে৷
ঘটনা চলাকালে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ নিলুফার পারভীন ও আবাসিক শিক্ষকেরা হলেই ছিলেন৷ ছাত্রলীগ নেত্রীদের বের করে নিয়ে যাওয়ার পর রোকেয়া হলের ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষকে ঘিরে ধরেন৷ তাঁরা হাতে লেখা একটি বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করতে প্রাধ্যক্ষকে চাপ দেন। একপর্যায়ে প্রাধ্যক্ষ সেখানে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন৷
ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা রোকেয়া হলের মেয়েরা আজ এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে আজ থেকে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত-শিবির) নিষিদ্ধ করা হলো৷ কোনো ধরনের পলিটিক্যাল রুম (রাজনৈতিক কক্ষ) বা গণরুম থাকবে না৷ রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে হবে না৷ কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা হলের সঙ্গে থাকবে না৷ আমরা হলের মেয়েরা যদি এসব দলের দ্বারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে এর দায় প্রশাসন ও হল প্রাধ্যক্ষকে নিতে হবে৷ আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করা হলো।’
খুলনা গেজেট/এইচ