খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২০১৮’র রাতের ভোটের দায় স্বীকার করে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জবানবন্দি
  শেখ হাসিনাসহ তিনজনের পক্ষে অভিযোগ গঠনে সময় আবেদন, পরবর্তী শুনানি ৭ জুলাই

রূপসায় অজ্ঞাত গলিত লাশটি মরিয়মের, স্বামী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার রূপসা উপজেলায় দেবীপুরে পানের বরজে অজ্ঞাত নারীর গলিত মরদেহটি চার মাসের অন্তঃস্বত্তা মরিয়ামের (২৭)। সে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মানসা গ্রামের মৃত মোঃ আবু বকরের মেয়ে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মরিয়মের স্বামী মোঃ রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রফিক স্থানীয় নৈহাটি ইউনিয়নের নেহালপুর গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। প্রসঙ্গত্ব, গত ১৫ সকালে রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের খানকার ঘাটের জনৈক ব্যক্তির পান বরজের পাশে অজ্ঞাত গলিত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।

সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে রফিকুলের সাথে প্রেমজ সম্পর্ক জেরধরে মরিয়মের বিবাহ হয়। বিয়ের পর স্বামী রফিকুল তাকে প্রায় মারপিট করতো। পরবর্তীতে মরিয়ম জানতে পারে রফিকুল মাদকের সাথে জড়িত। স্বামীকে মাদক সেবন ও বিক্রি থেকে ফিরে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হন স্ত্রী মরিয়ম। স্বামী রফিকুলকে নিয়ে মরিয়ম তিলককুদির বটতলার পাশে জয় পেট্রোল পাম্পের নিকটে বাসা ভাড়া করে বসবাস করতো বলে মরিয়মের বড় বোন ময়না জানান। তিনি আরও জানান, গত বুধবার রাতে ভাড়া বাসা থেকে স্বামী রফিক ডাকছে বলে বের হয়ে যায়। ময়নার ছেলে (নিহত মরিয়মের বোনের ছেলে) ইয়াছিন (১৩) খালার বাড়ি বেড়াতে যায়। গত বুধবার (১২ আগস্ট) রাতে মরিয়ম বোরকা পরে বাইরে যাবার সময় বলে যায় তোর খালু (রফিক) ডাকছে সেখানে যাচ্ছি। এই কথা বলে ঘর থেকে বের হবার পর আর ফিরে আসেনি।
নিহতের ভাগ্নে ইয়াছিন জানান, ওই রাত ১২টারদিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় আসলে খালুর (রফিকের) পায়ে রক্ত ও কাদাঁ-মাটি দেখেছি। আরেকটা ফোন আসলে সে তার গাড়ি নিয়ে বাইরে চলে যায়।

এদিকে, বিভিন্ন স্থানে খুজাখোঁজি করে না পেয়ে শনিবার (১৫ আগস্ট) রূপসা থানায় বিষয়টি জানাতে আসলে পুলিশ তাদের দেবীপুর একটা লাশ পাওয়া গেছে সেখানে যেতে বলেন। ময়না ও তার মা ঘটনাস্থলে না পেয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মরিয়মের লাশ দেখতে পায়। তার দাঁত দেখে শনাক্ত করে মরিয়মের পরিবার।
এসিড দিয়ে তার মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুড়িয়ে ফেলার কারনে তাকে শনাক্ত করে দাঁত দেখে। ছোট বেলায় তার দাঁতের কিছু চিহ্ন থাকায় তারা শনাক্ত করে তার বোনের লাশ। এছাড়া মরিয়ম চার মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিল।
তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতারক রফিকের ৪/৫টা স্ত্রী রয়েছে। সে তাদের দিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ ও মাদক বিক্রয় করাতে বাধ্য করতো। রফিকের কথা না শুনলে তাদের মারপিট করতে বলে মরিয়ম তার পরিবারকে জানাতো।

একাধিক সূত্র জানায়, রফিক রূপসাসহ কয়েকটি অঞ্চলের মাদক বিক্রি করতো। এমনকি রূপসার তিলক এলাকার কয়েক যুবক ও আশপাশের এলাকার কয়েক যুবক তার ভাড়া বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। ঘটনার পর নৈহাটির কর্ণপুর এলাকার একাধিক অভিযোগের হোতা এক ব্যক্তিকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তার সাথে রফিকের বেশ সখ্যতা ছিল বলে স্থানীয়রা জানায়।
এদিকে, লাশ উদ্ধারের পর রাতে অভিযান চালিয়ে মরিয়মের স্বামী রফিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপসা থানার এস আই মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে রবিবার সকালে নিহতের স্বামী রফিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!