নগরীর পশ্চিম রূপসা পাড়ে উচ্ছেদ অভিযানে হামলার ঘটনাটি ঘোলা জলের মাছ শিকারের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন কাঠ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। ক্ষমতাসীন দলের একজন রাজনীতিক নেতার অনুসারীরা অভিযানে নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্টো অসহায় শ্রমিকদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে বলে তাদের দাবি। অর্ধশতাব্দী ধরে ভোগদখলে থাকা শ্রমিকরাই ওই স্থানটি বন্দোবস্ত দেবার দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (০৭ফেব্রয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ সেলিম কাজী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রূপসা স্ট্যান্ড রোডস্থ সমিল শ্রমিকদের পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন করেছি। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে অপর একটি পক্ষ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রশাসনের উপর হালমা চালায়। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে নিরীহ সমিল শ্রমিকদের আসামী করে সুদীর্ঘ ৫০ বছরের ব্যবসা ও বসবাস হতে উচ্ছেদের নীল নকশার অংশ।
প্রকৃত ঘটনার বিবরণে তিনি আরও বলেন, রূপসা স্ট্যান্ড রোডে প্রায় ৩৯টি ছোট-বড় সমিল রয়েছে। প্রতিটি সমিলে নারী ও পুরুষ মিলে ৩৫ থেকে ৪০জন শ্রমিক কর্মরত; সবমিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান এখানে। দেড় হাজার শ্রমিকের পরিবারের সদস্যসহ গড়ে ৫জন করে হিসাব করলে প্রায় লক্ষাধিক এবং এই স্ব-মিলকে কেন্দ্র করে ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, ট্রাক ও ট্রলার শ্রমিকদের সংখ্যাও প্রায়ই ৫ হাজার। এদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫জন করে হিসাব করলে ২৫ হাজার। এ ব্যবসার উদ্যোক্তা, মুদি দোকান, চা দোকান, হোটেল, কাঠ ব্যবসায়ীদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা হিসেবে করলে আরও ২৫/৩০ হাজার লোক। সর্বসাকুল্যে প্রায় লক্ষাধিকের উপরে মানুষের রুটি-রুজির বিষয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সরকারের কাছ থেকে জমি ডিসিআর’র মাধ্যমে অর্ধশত বছর ভোগদখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহহীণ শ্রমিকরা কর্মস্থলের পাশেই বসবাস করছে। প্রথমে জানা ছিল না এখানে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের জমি আছে। এসব জমি সরকারি ‘গ’ তপশীল বর্ণিত সম্পত্তি। ২০১৩ সাল থেকে ডিসিআর পেতে দরখাস্ত দাখিল করলেও বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি। গত ১০ জানুয়ারি নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ একটি উচ্ছেদ নোটিশ দিয়ে একসপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদ হয়ে যেতে বলে। এরমধ্যে হঠাৎ করেই উল্লিখিত উপস্থিত হয় নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চলা অবস্থায় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধের মধ্যে ভাড়া করা লোকজন ভাঙচুর করে। এঘটনায় নিরীহ দরিদ্র শ্রমিকদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ যদি সরকারের বিশেষ কোন প্রতিষ্ঠান সৌন্দর্য্যবর্ধন বা রাষ্ট্রীয় অন্য কাজে ব্যবহার করতে চায় তো করতেই পারেন। তবে কোনো বিশেষ ব্যক্তির ব্যবসায়ী স্থান তৈরী করলে ভোগদখলীয় শ্রমিকরাই হকদার বন্দোবস্ত পাওয়ার। শ্রমিকরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি