খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

রিজভী শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ করেছেন, হতবাক হয়েছি : মেজর হাফিজ

গেজেট ডেস্ক

অসৌজন্যমূলক ভাষায় চিঠি পেয়ে হতবাক হয়েছি। দলের পক্ষ থেকে দেয়া শোকজ নোটিশ প্রসঙ্গে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। শোকজ নোটিশের জবাব পাঠিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি বিগত ২৯ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট, আমার যোগদানের তারিখ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাবার তারিখ, আমার নামের বানানসহ অনেক ভুলই রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে দৃশ্যমান। বিএনপিতে যোগদানের পূর্বেই আমি তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থীরূপে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেছিলাম। আমি বিগত ২২ বছর ধরে দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। দলের ভাইস চেয়ারম্যানকে একজন যুগ্ম মহাসচিব (আদিষ্ট না হয়েও) এমন কঠিন, আক্রমণাত্মক ভাষায় কৈফিয়ত তলব করায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি।

এখানে প্রটোকল ও সৌজন্যের ব্যত্যয় ঘটেছে। ব্যক্তি রুহুল কবির রিজভী একজন ভদ্র, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী নেতা, তার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে, তার কাছ থেকে এ ধরনের চিঠি আশা করিনি। রিজভী শিষ্ঠাচার বহির্ভূত কাজ করেছেন, এতে আমি হতবাক হয়েছি।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই পত্রে বর্ণিত অভিযোগ সম্পর্কে আমার নিম্নরূপ বক্তব্য পেশ করছি-

১. আমাকে কখনও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের দায়িত্ব দেয়া হয়নি।

২. জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক পদের অফার অসুস্থতার জন্য গ্রহণ করতে পারিনি। আমার বর্তমান বয়স ৭৬ বছর ২ মাস, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি কিংবা স্থায়ী কমিটিতে আমার চাইতে বয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যা ৪ এর অধিক হবে না বলেই আমার ধারনা।

৩. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সভায় যোগদানের পূর্বেই পুলিশ আমাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে, এ কারণেই বরিশাল যেতে পারিনি। আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল বর্তমান সরকার। বিএনপির কোন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে এধরনের মারাত্মক অভিযোগ দায়ের করার কথা আমার জানা নেই। এ মামলা ছাড়াও এক ডজন মামলায় আমি গত দশ বছর ধরে নিয়মিত হাজিরা দিয়ে যাচ্ছি।

৪. ৫. ৬. বর্ণিত দলীয় সভায় আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অতীতে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে জড়িত স্মরণীয় দিবসসমূহে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হোক, গত দেড় বছরে এ ধরণের অনুষ্ঠানেও দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আমাকে ডাকার প্রয়োজনবোধ করেননি। বোঝাই যাচ্ছে বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কোনঠাসা করে রাখার জন্য একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। বিগত এক বছরে আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ৬টি সভায় অংশগ্রহণ করেছি, আয়োজক জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ২টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ২টি, বিএনপি ঘরানাভুক্ত সংগঠন ১টি। দেশের খ্যাতনামা মুক্তিযোদ্ধারা এই সভাসমূহে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অসৎ উদ্দেশ্যে আমি বিএনপির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছি, এটি একেবারেই অসত্য ঢালাও মন্তব্য। বিগত ১২ই ডিসেম্বর প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানসহ অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের এক সভায় আমি শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নতুন নির্বাচন দেবার জন্য দাবি জানিয়েছি।

৭. প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আমি দলীয় স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কোন বক্তব্য দেইনি। সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন, এখানে আমাদের বক্তব্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রায়শ: বিকৃত এবং খন্ডিতভাবে প্রচার করা হয়। আমি ৩৪ বছর যাবৎ রাজনীতি করছি, কখনও কারো বিরুদ্ধে এমনকি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বক্তব্য রাখিনি। অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেও অনেকবার বক্তব্য রেখেছি, কিন্তু কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি।

 

খুলনা গেজেট /এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!