রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ব্যাংক গুলির উপর আমেরিকা সহ আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশ হতে রপ্তানী হওয়া চিংড়ির প্রায় ৮৫ লাখ ডালার সম পরিমাণ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছেনা বাংলাদেশী ব্যাংক গুলি। এ ব্যাপারে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ হতে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে পত্র দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবর্তনের সময় বৃদ্ধি এবং ওভারডিউ ইন্টাররেষ্ট চার্জ না করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন ২০ এপ্রিল ২০২২ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বরাবরে রাশিয়ার হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ রপ্তানীর বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবর্তনের সময় বৃদ্ধির জন্য পত্র দিয়েছেন।
পত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ রাশিয়াতে রপ্তানী হয়ে থাকে। বিদ্যমান রাশিয়া ও ইউক্রেন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ব্যাংকসমুহের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানীকৃত পণ্যের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যার্পনে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে তিনটি বিষয় উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
১. ইএক্সপি (EXP) এর বিপরীতে রপ্তানীমূল্য প্রত্যবর্তনের যে ১২০ দিনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, ইদানিং রাশিয়ার ক্ষেত্রে তা আরো ১২০ দিন বৃদ্ধি করার অনুরোধ।
২, যে সকল ডকুমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক FBP [ foreign Bill Purchase ] রয়েছে, তাও আরো ১২০ দিনের জন্য ওভারডিও [overdue] এর বহির্ভূত রাখার অনুরোধ। এবং
৩, এই আওতা বর্হিভূত সমস্যার কারণে বৈদেশিক মূদ্রা প্রত্যাবর্তনের সময়ের জন্য বাংকগুলো যেন ওভারডিউ ইন্টাররেষ্ট চার্জ [Overdue Interest Charge ] আরোপ না করার অনুরোধ।
এর আগে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো: আমিন উল্লাহ এবিষয়ে এফবিসিআইকে পত্র দেন। এই পত্রে বলা হয়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে জুলাই থেকে জানুয়ারী পযর্ন্ত আট দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার রপ্তানী হয় যা ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ব্যাংক গুলির উপর আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বাংলাদেশের রপ্তানী পণ্যের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবর্তনের জটিলতা দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার এসোসিয়েশন এর সিনিয়র সহ সভাপতি খালিলুল্লাহ ঝড়ু জানান, গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে শুধু রাশিয়ায় ১২ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন অর্থাৎ ১২৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার মাছ রপ্তানী হয়েছিল। এবছর উল্লেখিত টাকা প্রত্যাবর্তনের জটিলতা সহ বর্তমানে রপ্তানী প্রক্রিয়া অনিশ্চত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, রপ্তানী হওয়া চিংড়ি মাছের বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবর্তনে বিলম্বের কারণে তাদের নানা জটিলতার পড়তে হচ্ছে।
মৎস্য মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে উপ পরিচালক জানান, খুলনা থেকে গত ডিসেম্বর জানুয়ারী মাসে ফ্রেস ফুড ৫৯ দশমিক ০৭ মেট্রিক টন চিংড়ি মাছ রাশিয়ায় রপ্তানী করেছে। একই সময় বাগেরহাট সি ফুড রাশিয়ায় ১২০ দশমিক ৬৮ মেট্রিকটন চিংড়ি মাছ রপ্তানী করে। সম্প্রতি যুদ্ধের কারণে নতুন করে কোন এলসি আসছে না আন্তর্জাতিকভাবে রাশিয়ার ব্যাংক গুলির উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে ।
খুলনা গেজেট/ এস আই