রাশিয়ার হামলায় পুরস্কার বিজয়ী ইউক্রেনীয় এক লেখিকা নিহত হয়েছেন। নিহত ওই লেখিকার নাম ভিক্টোরিয়া আমেলিনা। তিনি গত সপ্তাহে রুশ হামলায় আহত হয়েছিলেন। হামলায় আহত হওয়ার কয়েকদিনের মাথায় মারা গেলেন তিনি।
সোমবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ক্রামতোর্স্কের একটি পিৎজা রেস্তোরাঁয় রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত হওয়ার পর পুরস্কার বিজয়ী ইউক্রেনীয় লেখিকা ভিক্টোরিয়া আমেলিনা তার আঘাতের কারণে মারা গেছেন। আমেলিনা যুদ্ধাপরাধ গবেষক ছিলেন এবং রুশ সেই হামলায় মারা যাওয়া ১৩তম ব্যক্তি তিনি।
লেখকদের সংগঠন পেন ইউক্রেন (PEN Ukraine) বলেছে, রুশ হামলায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসকরা ‘তার জীবন বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভিক্টোরিয়া আমেলিনার আঘাতটি বেশ মারাত্মক ছিল’।
মানবাধিকার কর্মীরা এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছেন। ক্রামতোর্স্ক শহরটি ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত অংশের কাছাকাছি অবস্থিত।
বিবিসি বলছে, গত মঙ্গলবার কলম্বিয়ার সাংবাদিক এবং লেখকদের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে ক্রামতোর্স্ক শহরের জনপ্রিয় রিয়া লাউঞ্জে খাবার খাচ্ছিলেন ৩৭ বছর বয়সী অ্যামেলিনা। এরই একপর্যায়ে সেখানে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে। হামলায় আহত হয়েছিলেন আরও ৬০ জন।
হামলার পর তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ডিনিপ্রোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার তার আঘাতের কারণে তিনি মারা যান বলে পেন ইউক্রেন জানিয়েছে।
গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘খুব কষ্টের সাথে আমরা আপনাকে জানাচ্ছি, লেখিকা ভিক্টোরিয়া আমেলিনা গত ১ জুলাই মারা গেছেন। ভিক্টোরিয়ার জীবনের শেষ দিনগুলোতে তার পরিবার এবং বন্ধুরা পাশে ছিল।’
বিবিসি বলছে, অ্যামেলিনা ছিলেন ইউক্রেনের সবচেয়ে বিখ্যাত তরুণ লেখকদের একজন। তিনি গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর যুদ্ধাপরাধ নথিভুক্ত করতে শুরু করেন। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন ফ্রন্টলাইনের কাছাকাছি শিশুদের নিয়েও কাজ করা শুরু করেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বছর তিনি লেখক ভলোদিমির ভাকুলেঙ্কোর একটি ডায়েরি প্রকাশ্যে আনেন। ইউক্রেনে আক্রমণের পরপরই ইজিয়ুম শহরে রাশিয়ান সৈন্যদের হাতে অপহৃত ও নিহত হয়েছিলেন ওই লেখক।
ইংরেজিতে লেখা ভিক্টোরিয়া আমেলিনার প্রথম নন-ফিকশন বই ‘ওয়্যার অ্যান্ড জাস্টিস ডায়েরি: লুকিং অ্যাট উইমেন লুকিং অ্যাট ওয়্যার’ (War and Justice Diary: Looking at Women Looking at War) এখনও প্রকাশিত হয়নি।
খুলনা গেজেট/এনএম