রামপালে সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগে ৯ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে তাদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিতকরাসহ অবমূল্যায়ন করায় তারা এই অনাস্থা আনেন। রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ৯ জন ইউপি সদস্য ১৬টি অভিযোগ এনে লিখিত এই অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।
রামপাল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন, মহিলা ইউপি সদস্য দীপ্তি রাণী হালদার, রোজিনা বেগম, মো. গিয়াস উদ্দিন, মনোজিত কুমার মুখার্জি, শেখ মো. সাইফুল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার মন্ডল, আ. ছালাম শেখ, মো. মিকাইল হোসেন, আলমগীর ফকির।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, এডিবির বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ের নামে স্কুলের ভুয়া প্রত্যায়ন দিয়ে গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমানের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা। বিগত বছরগুলোতে পরিষদের সকল কর্মকান্ড থেকে ইউপি সদস্যদের বিরত রাখা। উপজেলা থেকে বরাদ্দকৃত টিউবওয়েলগুলো মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে ইউপি সচিব গৌতম বসু ও গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমানের মাধ্যমে বিক্রয় করা। জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারেশ কায়েম ও প্রত্যয়নপত্রসহ সকল কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বেহিসাবি টাকা হাতিয়ে নেওয়া। গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান পরিষদের গাছ কর্তন ও পরিষদের পুরনো সকল আসবাবপত্র বিত্রি করে আত্মসাত করাসহ মাদকদ্রব্য ও নারী সংঘটিত কাজে লিপ্ত থাকে। বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন, বাইসাইকেল, স্কুল ব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল প্রকৃত হতদরিদ্র ও দুস্থদের মাঝে বন্টন না করে স্বজনপ্রীতি করা। এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা রাস্তাসহ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্প চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের মাঝে বন্টন না করে গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমানের মাধ্যমে ছয় নয় করে টাকা আত্মসাত করা। ৪ হাজার ৪ শত করে প্রতিমাসের ইউপি সদস্যদের সম্মানি ভাতা তেত্রিশ মাস ধরে প্রদান না করা। গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমান দায়িত্ব পালনকালে পোশাক পরিধান না করা। ইউনিয়ন পরিষদের সকল প্রকল্প ও প্রজেক্ট চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন পরিষদের সচিব গৌতম বসু ও গ্রাম পুলিশ হাছিবুর রহমানের মাধ্যমে পরিচালনা করা ও ইউনিয়নের বাজেট সম্পর্কে ইউপি সদস্যদের কাছে কোনো তথ্য সরবরাহ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ সংযোজন করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে তারা আরো দাবি করেছেন বিগত সময়ের লাঞ্চনা-বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেতে ওই চেয়ারম্যান সাথে কাজ না করার দাবিতে এই অনাস্থার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযোগের বিষয়গুলি তদন্ত করে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনেরও জোর দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দীন হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানান, অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। তদন্ত করে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে