নাম মিরাজুল শিকদার। বয়স ৪১ বছর। স্ত্রী আফিরুন বেগম ও ১৭ বছর বয়সী এক সন্তান মিলন শিকদারকে নিয়ে থাকেন নতুন করে জেগে ওঠা কৈগরদাসকাটির চরে। তারা প্রান্তিক ও ভূমিহীন হওয়ায় গত ৯ আগষ্ট বুধবার প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত আবাসন প্রকল্পের ঘরও পেয়েছেন। পেয়েছিলেন মাথা গোজার ঠাঁই।
মিরাজুলের স্ত্রী আফিরুন জানান, শনিবার দিনগত ভোর ৩ টায় ঘরে ফেরেন স্বামী মিরাজুল। এর পূর্বেই স্বামীর অপেক্ষায় বসে থেকে রাতে খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন স্ত্রী। ভোররাতে এসে মিরাজুল বলেন নদীর পানি কমে গেছে, চলো জাল (ঝাকি জাল) টেনে আসি। তখন স্ত্রী বলেন আমি যাবো না। এই বলে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর ৪ টায় প্রতিবেশীদের ডাকচিৎকারে সে জেগে ওঠে। স্বামীকে বাড়ির থেকে কিছু দূরে অসুস্থ অবস্থায় দেখে তার কাছে জানতে চান, কি হয়েছে তোমার? উত্তরে মিরাজুল বলেন, আমার বুক জ্বালা করছে, আমার বুকে একটু তেলপানি মেজে দাও। এরপরে সে আরও অসুস্থ হলে নৌকা ঠিক করে চালনা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মিরাজুল মারা যান বলে তার স্ত্রী আফিরুন দাবি করেন।
কি কারণে সে মারা গেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্বামী মিরাজুল স্ট্রোক করেছিলেন। কেন তাকে ময়না তদন্তের জন্যে পু্লিশ মর্গে পঠালো? তখন তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাসুর রিয়াজ, চাচা শ্বশুরের পুত্র তারিকুল ও বাবু পু্লিশের কাছে অভিযোগ করে বাগেরহাট মর্গে পাঠিয়েছে। আমার স্বামীর কোন শত্রু ছিল না, সবাই তাকে ভালবাসতো।
এ বিষয়ে মৃত মিরাজুলের ভাই খোকন, রিয়াজ ও তারিকুলদের মতামত পাওয়া যায়নি। তবে তারা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্যে ময়না তদন্তের জন্যে দাবি করেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রামপাল থানার ওসি এস এম আশরাফুল আলমের সাথে। তিনি জানান, লাশের গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে কথা বললে ও এলাকাবাসী জানায় মিরাজুল বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়। পরিবারের অন্য সদস্যদের আপত্তি থাকায় রবিবার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে বাগেরহাটের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম