ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এক সময়ের তারকা বিকাশ রঞ্জন দাস। তার নাম এখন মাহমুদুল হাসান। তবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এখনও তাকে বিকাশ নামেই জানে। বিকাশ রঞ্জন ধর্মান্তরিত হয়েছেন অনেক আগেই। ক্রিকেটে ছেড়ে তিনি এখন ব্যাংক কর্মকর্তা।
সতীর্থ সাবেক তারকা ক্রিকেটার রাজিন সালেহের নিয়মিত নামাজ পড়া দেখে ইসলামের ওপর ভালোবাসা জন্মায় তার। এরপর সিনিয়র সতীর্থ ও বর্তমানে বিসিবির অন্যতম পরিচালক আকরাম খানের থেকে পাওয়া দুরুদ শরীফ পড়েন।
এভাবেই ইসলামের প্রতি আবেগ জন্মায় এবং এক সময় ইসলামের ছায়াতলে হাজির হন বিকাশ রঞ্জন (মাহমুদুল হাসান)। ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা খুব বেশি বড় হয়নি এই পেসারের। ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ও ২০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন।
তবুও বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের নাম লিখেছেন এই ক্রিকেটার। বয়সভিত্তিক দল থেকে সরাসরি সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ টেস্ট দলে।
২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম টেস্টের একাদশে ছিলেন তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সে সাদা দলের জার্সিতে অভিষেক ঘটে তার।
কিন্তু ক্যারিয়ারকে আর টেনে নিতে পারেননি বিকাশ। জাতীয় দলে ডাক পাননি আর। ঐতিহাসিক ওই টেস্টই তার প্রথম ও শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
তবে কয়েক বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছিলেন। পরে ২২ বছর বয়সেই ক্রিকেটকে বিদায় জানান। যদিও হৃদয়ে তার ক্রিকেটের ব্যাট-বল ধ্বনিত হয় এখনও। এখনও নিয়মিতই খেলে থাকেন ব্যাংকের কর্পোরেট ক্রিকেট লিগগুলোতে।
ধর্মান্তরিত হয়ে এখন কেমন কাটছে তার জীবন?
মাহমুদুল হাসান ওরফে বিকাশ রঞ্জন দাস বলেন, আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর আমি যে বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, এর মতো শান্তির ধর্ম আরো কোনোটিই নয়। শৈশব থেকেই ইসলাম ধর্ম ভালো লাগতো। মুসলমানদের ধর্ম পালনরীতি আকর্ষিত করত আমাকে। পরে ইসলাম নিয়ে আমি পড়াশোনা করে জ্ঞান অর্জন করি। ক্রিকেটার রাজিন সালেহ আমার খুব কাছের বন্ধু। খেলার ফাঁকে ও নানা সময় রাজিন সালেহের নিয়মিত সালাত আদায় আমার ওপর প্রভাব ফেলে। এরপর আকরাম ভাই আমাকে দরুদে হাজারি পড়তে দেন। এরপর আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি।
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম ম্যাচে পাওয়া উইকেট নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন মাহমুুদুল হাসান।
বললেন, ‘একটু জোরের উপরেই বলটা করেছিলাম। বাড়তি বাউন্সে বল ভারতীয় ওপেনার সদাগোপান রমেশের ব্যাটে লেগে স্টাম্পে লাগে। একটু পরেই আম্পায়ার স্টিভ বাকনার এগিয়ে এসে আমার হাতে বেলটা তুলে দিয়ে বলেন, এটা যত্ন করে রেখে দিও। এটা তোমার প্রথম টেস্ট উইকেটের স্মৃতি। বেলটা হাতে নিয়ে দেখলাম ভেঙে গিয়েছে। আহ কী মধুর সেই স্মৃতি! সেই মধুর স্মৃতি কী করে ভুলব বলুন তো! শান্ত (হাসিবুল হোসেন) ভাই প্রথম ওভার করেছিল। আর এক প্রান্ত থেকে আমি শুরু করেছিলাম।’
খুলনা গেজেট/কেএম