রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে কমছে রোগী। সেই সঙ্গে কমেছে মৃত্যুহারও। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে মারা গেছেন আরও ৯। এর মধ্যে করোনায় ৫ জন, করোনা উপসর্গে ৩ জন এবং করোনা নেগেটিভ হয়েও একজন মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনায় ৩ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ৪ জন এবং করোনা নেগেটিভ হয়েও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) হাসপাতালে করোনায় ৫ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৪ জন এবং করোনা নেগেটিভ হয়ে ২ জন মারা যান।
হাসপাতাল পরিচালক জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে পাবনার ২ জন এবং রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোরের একজন করে ৫ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও মেহেরপুর জেলার একজন করে ৪ জন। করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় কুষ্টিয়া জেলার একজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪ জন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবীড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ছাড়া ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন করে এবং ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন মারা গেছেন।
এই এক দিনে ৪ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন করোনা ইউনিটে। যাদের ৩ জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সি ৪ জন মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৪২ জন। একদিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ৩৬৩।
বর্তমানে রাজশাহীর ১৬২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৩ জন, নাটোরের ৫৪ জন, নওগাঁর ৩১ জন, পাবনার ৪৭ জন, কুষ্টিয়ার ১০ জন, চুয়াডাঙ্গার একজন, সিরাজগঞ্জের একজন, মেহেরপুরের ২ জন এবং বগুড়ার একজন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮০ জন। একদিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ১৯২। ৮ জন কমে করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি দাঁড়িয়েছে ৯৭ জনে। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ৬৫ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৯ জন।
এর আগে বুধবার (১১ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৫৯ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৬২০ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জনের।
পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২০ দশমিক ২১ শতাংশ, নওগাঁর ৯ দশমিক ২০ শতাংশ এবং নাটোরের ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৭৯ জন। এর মধ্যে করোনায় ৬৫ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ৯০ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়।
গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন। এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
খুলনা গেজেট/কেএম