রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে দু’টি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও নানা কারণে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করার জন্য সুপারিশের লক্ষ্যে সরকার জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দু’টি কমিটি গঠন করেছে।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা), যুগ্ম-সচিব (আইন), আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যিনি যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের নিচে নয়), উপসচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব, সহকারী সচিব, আইন-১ শাখা, জননিরাপত্তা বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকবেন এই কমিটিতে।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে-
# জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশ প্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সুপারিশগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করবে ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
#দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর আওতাধীন মামলাসমূহের মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৮-এর ১০ (৪) ধারার বিধানমতে কমিশনের লিখিত আদেশ ব্যতীত প্রত্যাহার করা যায় না। এ কারণে এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।
জেলা পর্যায়ের কমিটি
জেলা পর্যায়ের কমিটিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সভাপতি করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে করা হয়েছে সদস্য সচিব। এছাড়া পুলিশ সুপারকে (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) করা হয়েছে সদস্য। এছাড়া পাবলিক প্রসিকিউটরকে (মহানগর এলাকার মামলাসমূহের জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর) সদস্য করা হয়েছে।
জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে-
# রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
# আবেদনের সঙ্গে এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিটের সার্টিফাইড কপি দাখিল করতে হবে।
# আবেদন প্রাপ্তির ৭ কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দরখাস্তটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্র বিশেষে মেট্রোপলিটান পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য প্রেরণ করবেন।
# আবেদন প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর (ক্ষেত্র বিশেষে মেট্রোপলিটান পাবলিক প্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর প্রেরণ করবেন।
# পাবলিক প্রসিকিউটর এর মতামত সংগ্রহপূর্বক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন।
# জেলা কমিটির কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্যকোন উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।
# জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওই সুপারিশ, মামলার এজাহার, চার্জশিটসহ আবেদন প্রাপ্তির ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংযুক্ত ‘ছক’ অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে।
খুলনা গেজেট/এএজে