মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল এনএলডি রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ আসন হেরেছে। জাতিগত সংখ্যালঘু রাখাইনদের দল আরাকান ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) ও আঞ্চলিক দলগুলোর কাছে এনএলডি এখানে পরাজিত হয়েছে। রাখাইনে অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটগ্রহণ বাতিল হওয়ায় ২৮ আসনে ভোট হয়। খবর মিয়ানমার টাইমসের। ওই আসনগুলোর বেশিরভাগে জয় পেয়েছে এএনপি ও স্থানীয় আঞ্চলিক দলগুলো। দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম দল এএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দাও আই নু সেইন বলেন, এএনপির সদস্যরা কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের আটটি আসনে আর রাজ্য পার্লামেন্টের ছয়টি আসনে জয়লাভ করেছেন।
তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ভোট বাতিল না হলে আরও বেশি আসন পেত তার দল। মিয়ানমারে অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে সেনাবাহিনী ও সেনাসমর্থিত সরকারের অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় এনএলডি। একসময় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে খ্যাতি অর্জন করা সু চি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েন। এর পরও মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে সু চি এখনও জনপ্রিয়। সম্প্রতি জরিপে দেখা গেছে, ৭৫ বছর বয়সী নোবেলজয়ী সু চিকে সবচেয়ে আস্থাভাজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এখনও মনে করেন দেশটির ৭৯ শতাংশ মানুষ। মিয়ানমারে ৩ কোটি ৭০ লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটার। তবে দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবার ভোটদানের হার কম হতে পারে। মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব প্রবল। সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সেনাসদস্যদের জন্য বরাদ্দ। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর দেখভালও সেনাবাহিনী করে।
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দেশটির সাধারণ নির্বাচনে জয় দাবি করেছে। সোমবার দলটির মুখপাত্র এই দাবি করেন। তবে সংঘাতকবলিত রাখাইন রাজ্যে হেরেছে দলটি। সেখানে ভালো ফল করেছে সংখ্যালঘু রাখাইনদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল আরাকান ন্যাশনাল পার্টি।
এদিকে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) দুই মুসলিম প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এদের মধ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষ। তারা হলেন– পাবেডান শহরের আসনে জয়ী হয়েছেন ইউ সিথু মাউং। অন্যদিকে মান্ডালি অঞ্চলের শিংগাইং শহরের আসনে জয়ী হয়েছেন দও উইন মেয়া মেয়া। ক্ষমতাসীন দলের দুই মুসলিম প্রার্থীই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপুল ভোটে হারিয়েছেন। এদের মধ্যে ইউ সিথু মাউং তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন ১২ হাজার ৮৮২ ভোটে।