জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হননি। দল থেকে তার জন্য একটি আসন ফাঁকা রাখা রেখে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা দেওয়া হয়। যদিও রওশনপন্থিরা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, দয়ার আসন রওশন গ্রহণ করবেন না। পরে রওশন নিজেই জানান দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি, সেজন্য তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না।
এসবের মধ্য দিয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পথে এগোচ্ছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। আলোচনায় রয়েছে দলটির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতার বিষয়। সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু যখন রওশনকে নিয়ে প্রশ্ন শুনলেন, ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তর এলো তার কাছ থেকে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে রওশন এরশাদকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘যে চ্যাপ্টার ক্লোজড, সেটা বারবার কেন আনেন। দলে পন্থি বলে কিছু নেই। আমরা রওশন এরশাদকে সম্মান করি। রওশনপন্থিদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
রওশনকে নিয়ে যেন ভবিষ্যতে আর কোনো প্রশ্ন না করা হয়, সেজন্য সাংবাদিকদের অনুরোধও করেন চুন্নু। তিনি বলেন, ‘তাহলে আমি কোনো উত্তর দেবে না।’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা বিষয়ক আলোচনা প্রসঙ্গে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘আসন সমঝোতা শুধু আমাদের নয়। এ ধরনের আপস অন্যান্য দেশেও হয়। এ বিষয়ে স্থায়ী কোনো কথা বলার সুযোগ নেই।’
যদিও বুধবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেছিলেন, আসন সমঝোতা নিয়ে দুই দলের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনও ভিত্তিহীন।
এই বক্তব্যের বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে চুন্নু বলেন, ‘নির্বাচন বা রাজনীতিতে চূড়ান্ত কোনো বিষয় নেই। যেকোনো সময় যেকোনো কথার প্রেক্ষিতে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এখানে চূড়ান্ত বলে কিছু নেই। আপনি ভারতে যান– বিজেপি অনেক বড় দল, অনেক সিটে তারা নমিনেশন দেয়নি। হয় তারা কারও সঙ্গে জোট করেছে অথবা নীরবে অন্য কোনো দলের সঙ্গে আনঅফিসিয়ালি আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছে। তাদের সুযোগ দিয়েছে। এটা ভারতে হয়, আমাদের দেশে হয়, পাকিস্তানে হয়– সব দেশেই হয়।’
জাপার নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব বলেন, ‘ইশতেহারে আনুপাতিক হারে বেকার সমস্যা বিকেন্দ্রীকরণ, চিকিৎসাসেবার উন্নতি, শিশু অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। ভোটের প্রচার সম্পর্কে এখনও কোনো পরিকল্পনা হয়নি। দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন যেগুলো আপিলে গেছে, সেগুলো কী হয় তা দেখে আমরা ইশতেহার দেব।’
এবার কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে জাপার প্রার্থী মুজিবুল হক চুন্নু। তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ। এ প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, ‘মামলার বিষয়ে মনোনয়ন ফরমে ফৌজদারি আইনের কথা লেখা আছে, সিভিল মামলার তথ্য লিখতে হবে– এমন কিছু নেই। সিভিল মামলার তথ্য দেওয়ার সুযোগ নির্বাচনী আচরণবিধিতে নেই। আসলে উনি আমার সম্মানহানি করার জন্য এটা করেছেন।’
খুলনা গেজেট/কেডি