বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত। ১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তবে ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ সিনেমায় প্রধান নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ খ্যাতি কুড়ান এই অভিনেত্রী।
মাধুরী দীক্ষিত নিজে এখন একটি ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু এমনো দিন ছিল যখন মাধুরীকে দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে একটি সুযোগের জন্য। একবার বলিউড অভিনেতা সানি দেওলের সঙ্গে অভিনয় করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন মাধুরী। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার জন্য চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি এই অভিনেত্রী।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে আলাপ হয় রাকেশ নাথের। তখন রাকেশ ছিলেন অনিল কাপুরের ম্যানেজার। রাকেশের দায়িত্ব ছিল—মাধুরী যাতে ভালো সিনেমায়, ভালো চরিত্রে প্রথম সারির নায়কদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পান। ওই সময়ে গুলশন রায়ের ছেলে প্রযোজক রাজীব রায় একটি সিনেমা নির্মাণ করছিলেন। এতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ, সানি দেওল ও জ্যাকি শ্রফ। নায়িকার ভূমিকায় সুযোগ পান সংগীতা বিজলানি ও সোনম।
এ সিনেমায় কাস্ট করা হয় মাধুরীকে দীক্ষিতকেও। রাকেশ প্রযোজককে বলেছিলেন, মাধুরীকে নিতে হলে নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ দিতে হবে। প্রথমে মাধুরীকে নাসিরুদ্দিন শাহর বিপরীতে সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু রাকেশ এই জুটিতে খুশি ছিলেন না। কারণ বাণিজ্যিক সিনেমার তুলনায় নাসিরুদ্দিন অনেক বেশি জনপ্রিয় ছিলেন সমান্তরাল সিনেমায়। তার পরিবর্তে সানি দেওলকে নায়ক হিসেবে মাধুরীর বিপরীতে চান রাকেশ।
রাকেশের অনুরোধে সর্বশেষ রাজি হন প্রযোজক। ১৯৮৯ সালে ‘ত্রিদেব’ সিনেমায় সানির বিপরীতে নায়িকা হন মাধুরী। যত দিনে এ সিনেমার শুটিং শুরু হয়, ততদিনে সিনেমাটিই বদলে যায়। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় ‘তেজাব’। মুক্তির পর বক্স অফিসে এই সিনেমার সাফল্যের জেরে মাধুরীর জনপ্রিয়তা অনেকটা বেড়ে যায়। তার প্রভাব পড়ে ‘ত্রিদেব’ সিনেমার শুটিংয়ে। সিনেমার স্বার্থে প্রযোজকরা মাধুরীর দৃশ্য বৃদ্ধি করেন।
‘ত্রিদেব’ সিনেমার ‘ওয়ে ওয়ে’ গানে প্রথমে তিন নায়িকার মধ্যে মাধুরীকে এক কোণে রাখার পরিকল্পনা ছিল পরিচালক-প্রযোজকের। পরে তাকেই মাঝখানে রাখা হয়। বরং তার দু’পাশে থাকেন সংগীতা ও সোনম। সানি দেওলের সঙ্গে ‘ম্যায় তেরি মোহাব্বত মে’ গানের দৃশ্যে মাধুরীর অভিনয়ও নজর কেড়েছিল দর্শকদের।
‘ত্রিদেব’ মুক্তির আগে মাধুরীর ‘রাম লক্ষ্মণ’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’-এর মতো বক্স অফিস সফল সিনেমাগুলো হলে চলে এসেছিল। ফলে বলিউডে মাধুরীর অবস্থান বদলে যায়। এক সময় সুযোগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকা মাধুরী নিজেই সুযোগ প্রত্যাখ্যান করতে থাকেন। ধীরে ধীরে নবাগত মাধুরী পৌঁছে যান জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
খুলনা গেজেট/কেএম