প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন জলবায়ু পরিবর্তন কূটনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে। তিনি বলেন, ‘প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা জলবায়ু কূটনীতির ক্ষেত্রে নতুন গতির সঞ্চার করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ শুক্রবার বিকেলে গণভবনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ দূত জন কেরি সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ২২-২৩ এপ্রিল, ২০২১ অনুষ্ঠেয় ভার্চুয়াল লিডার্স সম্মেলনে যোগদানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান। এ সময় আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান জন কেরি।
অন্ততপক্ষে ৪০টি দেশ এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে। বৈঠকে কেরি বলেন, বাংলাদেশ চাইলে তারাও বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ এর টিকা দিতে পারে। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে টিকা উদ্বৃত্ত হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত দূষণের ঝুঁকি হ্রাস করতে জলবিদ্যুতের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুৎ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিকল্প শক্তির উৎস ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
কেরি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলো অন্যদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবুজ জলবায়ু তহবিলের এক মিলিয়ন ডলার ছাড়াও দুই মিলিয়ন ডলার দেবে। কেরি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নিঃসরণকারী (কার্বন) নয় এবং নিঃসরণে যাদের অবদান নগণ্য, তারাও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে, তিনি এটাও বলেছেন যে, দেশের উন্নয়নের জন্য জ্বালানি প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারা ভারত, ভুটান এবং নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপক্ষীয় উপায়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য কথা বলেছেন। তিনি বলেন, দেশে পাঁচ দশমিক আট মিলিয়ন সৌর সংযোগ রয়েছে, সৌরশক্তি সেচের জন্য প্রয়োজনীয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, তাঁর সরকার জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকবেলা করার জন্য অন্যান্য উদ্যোগের সঙ্গে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি উদ্যোগে এরই মধ্যে সারা দেশে প্রায় ১১ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে এবং তাঁর দলীয় নেতাকর্মীরা ১০ মিলিয়ন অন্য গাছও লাগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী জন কেরিকে বঙ্গবন্ধু রচিত কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী (ইংরেজি সংস্করণ) এবং সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেনস ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্যা নেশন, বাংলাদেশ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিরিজের বই উপহার দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।