বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না, আমরা বলছি, অকার্যকর একটা শাটডাউন এটা। যে যেভাবে পারছে যাচ্ছে। পোশাক কারখানা খোলা রাখছে অথচ ব্যাংক বন্ধ রাখছে। মূলত সরকারের কোনো সমন্বয় নেই, কোনো পরিকল্পনা নেই, কোনো রোডম্যাপ নেই। এই যে সাতদিন লকডাউন তারপরে কী হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই।’
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, ‘যার পেটে খাবার নেই সে কি লকডাউন বা করোনা মানবে? করোনা কি তাঁকে আটকাতে পারবে? সাধারণ মানুষের তো খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এই রমজানে টিসিবি (সরকারের প্রতিষ্ঠান) নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বরাবরের মতো এবারও সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়েছে। আমাদের সময় ছিল না তা বলব না। সবসময় ছিল তবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। আগে রমজানের সময় টিসিবি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করত, সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমায় রাখার চেষ্টা করত। এবার সেই টিসিবি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে সবজি, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, খেজুর, সব কিছুর দাম ক্রয়সীমার বাইরে। সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। আর এখন চালের দাম কত সবাই জানে। এটার একটা উদ্যোগও তারা নিয়েছিল, তবে সাধারণ মানুষ নয় আওয়ামী লীগের লোকজন সেই সুবিধা পেয়েছে।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের দুর্নীতি চরম পর্যায়ে যাওয়ার কারণে, একদলীয় শাসনের কারণে প্রশাসনসহ কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। বিএনপির লোকজন, যারা বড় ব্যবসায়ী ছিলেন তারা গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।’
মোবাইল অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল রাইডারদের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা ঢাকা শহরে মোটরসাইকেলে রাইডিং করেন তারা গ্রাম থেকে এসেছেন একটু আয়ের আশায়। তাদেরও আজ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৬ মার্চের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করছে। এই লকডাউনের মাঝেও বিরোধী দল ও মতের লোকদের দমন করছে। বাকস্বাধীনতার অধিকার সবার আছে, অথচ সরকার বিরোধী মত দমন করতে একের পর এক আইন করছে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোথাও কোনো সরকার টিকে থাকতে পারেনি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছেন। আমরা সবাই দোয়া করছি তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। আমরা সবসময় খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় আমরা সবসময় বলছি একটা জাতীয় কমিটি করেন। সব রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে। সেটা সরকার করছে না, করবে না। কারণ এটা করলে তো তাদের যে লুটপাট, দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম