যশোর পৌর এলাকায় এবার করোনারোধী টিকাদান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ৯টি ওয়ার্ডে তিনদিন এ টিকা প্রয়োগ করা হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রও ঘোষণা করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েই এসব কেন্দ্র থেকে টিকা গ্রহণ করা যাবে। লাগবে না কোন ম্যাসেজ। আগামী ৭ আগষ্ট থেকে শুরু হচ্ছে এ কর্মসূচি।
সূত্র জানায়, গত ১২ জুলাই থেকে দেশে দ্বিতীয় দফায় মানুষের মাঝে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এসময়ে জেলা পর্যায়ে মানুষকে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা দেয়া হয়। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাসিং ইনস্টিটিউটে শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মানুষকে এ টিকা দেয়া হয়। এখানে টিকা নিতে প্রতিদিন ব্যাপক সংখ্যক মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। এ কাজে হিমশিম খাচ্ছে সেবিকাসহ স্বাস্থ্য কর্মীরা। এ অবস্থা বিবেচনায় এনে স্বাস্থ্য বিভাগ টিাকাদানে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা শহর পর্যায়ে পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিাকাদান কেন্দ্র খুলেছে। এখানে মানুষ শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন ও ম্যাসেজের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। এ কাজটি করবেন স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। এ কারণে শহর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের মানুষ তাদের পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রে গিয়ে সহজেই করোনারোধী টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।
যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ লক্ষে ৯টি ওয়ার্ডে তাদের কেন্দ্র ঘোষণা করেছে। এসব কেন্দ্রগুলো হলো, ১ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব বারান্দিপাড়ার মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৮ ও ১০ আগষ্ট ওয়ার্ডবাসীকে টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর সাহিদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন শাহানাজ পারভীন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে লোন অফিসপাড়ার সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন স্কুল। এখানে আগামী ৭, ৯ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর রাশেদ আব্বাস রাজের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন ফিরোজা বেগম। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোপ জেল রোড সরকারি বিএড কলেজ। এখানে আগামী ৭, ৮ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর মোকছিমুল বারী অপুর তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন নাহিদা আক্তার। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিমান অফিস মোড়ের নিরিবিলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৮ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর জাহিদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন বিউটি কুন্ডু।
৫ নম্বর ওয়ার্ডে স্টেডিয়ামপাড়া মিউনিসিপ্যাল প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৮ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর রাজিবুল আলমের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন নারায়ন চক্রবর্তী। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এমএম আলী রোডের ইনস্টিটিউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৯ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমনের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন হালিমা বেগম।
৭ নম্বর ওয়ার্ডে ইসহাক সড়কের শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৯ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর শাহেদ হোসেন নয়নের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন আসনানুল কাদের। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বেজপাড়া গুড়গোল্লার মোড়ের আজিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৯ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর প্রদীপ কুমার নাথ বাবলুর তত্ত¡াবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন মাহফুজা পারভীন ময়না। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নাজির শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে আগামী ৭, ৮ ও ১০ আগষ্ট টিকা দেয়া হবে। কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে সুপার ভাইজার হচ্ছেন বর্ণালী সরকার। এসব কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট দিনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে। পরবর্তীতে টিকাদানের দিন আরো বাড়ানো হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে যশোরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শায়েমুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে করোনা টিকার রেজিন্ট্রেশন নিয়ে ১৫৪ জনের একটি দল তৈরি করেছে। তারা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করবেন। যাতে মানুষ সহজে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা গ্রহণ করতে পারেন।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহিন বলেন, যশোর জেলার সব মানুষকে করোনারোধী টিকাদানের আওতায় আনা হবে। সহজ শর্তে তাদেরকে টিকা দেয়া হবে। যাতে কেউ ঝামেলা মনে করে টিকা দিতে অনাগ্রহী না হয়। তিনি বলেন, মানুষ শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে এনেই ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে থেকে টিকা নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাদের কোন ম্যাসেজের প্রয়োজন হবে না। টিকাদান সহজ করতে সরকার এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/কেএম