যশোরে শিক্ষিকা স্ত্রী আসমা খাতুনের বিরুদ্ধে এবার প্রতারণার অভিযোগে আদালতে পাল্টা মামলা করেছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর। বৃহস্পতিবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিচারক সাইফুদ্দীন হোসাইন মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত স্ত্রী আসমা খাতুন শহরের খড়কি কবরস্থান এলাকার আবু সিদ্দিকীর মেয়ে ও সদর উপজেলার বসুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা। আগামি ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি মামরার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
বাদী হুমায়ুন কবীর মামলায় উল্লেখ করেছেন, তিনি যশোর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক পদে চাকরি করেন। ২০০৫ সালের ২৩ মে এক লাখ এক টাকা দেন মোহরে তাদের বিয়ে হয়। সংসারকালে তাদের আইমান কবীর (১৩) নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এরপর তারা খড়কি শাহ আব্দুল করীম রোডের মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন। এরই মধ্যে স্ত্রী আসমার ভাইয়ের বাড়ির পাশে স্বামী-স্ত্রীর দু’জনের নামে জমি ক্রয় করে বসবাস করবেন বলে স্বামী হুমায়ুন কবীরকে বলেন। ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর হুমায়ুন কবীরের ভাইসহ বিভিন্নভাবে ধার করে স্ত্রীকে পাঁচ লাখ টাকা দেন। কিন্তু আসমা খাতুন প্রতারণামূলকভাবে নিজের নামেই জমির দলিল করেন। এরপর ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে না দিলে স্বামীকে তালাক দেয়াসহ নাবালক সন্তানকে হত্যার হুমকি দেন আসমা। ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর তিনি আবারো সাড়ে চার লাখ টাকা দেন স্ত্রী আসমাকে। এরপরও স্বামীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আসমা। স্বামী টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ছেলের উপর নির্যাতন শুরু করে। ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট ফের তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেন হুমায়ুন কবীর। ওইদিনই তিনশ’ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে আসমা অঙ্গীকারনামা দেন, আর কোনদিন স্বামীর কাছে টাকা দাবি করবেন না। কিন্তু একই বছরের ৪ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে পিতা আবু সিদ্দিকীসহ ৮/১০ লোক নিয়ে ভাড়া বাসা থেকে হুমায়ুন কবীরকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ৫ অক্টোবর এ ব্যাপারে হুমায়ুন কবীর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন।
পুলিশের হস্তক্ষেপে বাসার দরজায় লাগানো তালার চাবি ফেরৎ দেন আসমা। কিন্তু দাবিকৃত টাকা না দিলে স্বামী হুমায়ুন কবীরকে হত্যার হুমকি দেন। তার কাছ থেকে আরো টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে আসমা যৌতুক নিরোধ আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এরপর গত ২৭ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে জেলা শিক্ষা অফিসের রেস্ট হাউজে আসমাকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন