যশোরের আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ শিকদার আক্কাস আলী, এসআই আবু আনসারসহ সাত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নয় বছর পর আদালতে হত্যার পর গুমের মামলা হয়েছে। যশোর সদর উপজেলার কিসমত নওয়াপাড়া গ্রামের বিএনপি কর্মী মাসুদকে গুমের অভিযোগ এনে তার মামা কুদ্দুস আলী মামলাটি করেছেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন কোতোয়ালি থানাকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুহিন বালুজ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, পুলিশ সদস্য হাফিজ, সাইদ, অভিজিৎ ও হাসনাত।
মামলায় বাদী বলেছেন, তিনি ও তার ভাগ্নে মাসুদ বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ২০১৫ সালে বিএনপির ডাকা হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন তিনি ও তার ভাগ্নে মাসুদ। এরই জের ধরে ওই বছরের ৩ আগস্ট রাত সাড়ে এগারোটার পর আসামিরা তার বাড়িতে হানা দেয়। এসআই আনসার তার নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকেন। তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে এলে আকস্মিকভাবে তাকে তুলে পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। এসময় আশপাশের লোকজনসহ ভাগ্নে মাসুদ বাধা দিলে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদকেও গাড়িতে তুলে নেয়। পরে জোর করে তাদের দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়। মধ্যরাতে মাসুদকে থানা থেকে বাইরে নিয়ে যায় আসামিরা।
এসময় বাদী জিজ্ঞাসা করলে আসামিরা জানায়, মাসুদকে হত্যা করা হবে। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসা করলে পরদিন পুলিশ জানায়, তাকে একটি অস্ত্র মামলায় চালান দেয়া হয়েছে। ওইদিন থেকে গত ৯ বছরেও মাসুদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আইনগত কোনো সহযোগিতাও দেয়নি পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে আইনজীবী রুহিন বালুজ বলেন, গত নয় বছর বাদীপক্ষ মামলা করার সাহসই পায়নি। তারা নিজেরাই আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের পর তারা বিচারের জন্য আদালতে এসেছেন। মামলার অভিযোগ গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন আদালত। কোতোয়ালি থানাকে নিয়মিত মামলা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম