যশোরের নরেন্দ্রপুরে স্কুলের সেফটিক ট্যাংক থেকে ইটভাটা শ্রমিক ফাহিমার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই নারীর সাথে এক পুরুষের পরকিয়ার কারণে স্বামী জাহাঙ্গীর তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বলে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
তিনি বলেছেন, প্রথমে ফাহিমার মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। এতে ফাহিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংক’র মধ্যে লাশ ফেলে দেয় জাহাঙ্গীর। লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যায় জড়িত নিহত ফাহিমার স্বামীকে আটকের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন স্বামী জাহাঙ্গীর। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই যশোরের এসআই গোলাম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটক জাহাঙ্গীর হোসেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রামের দাউদ মোড়লের ছেলে।
পিবিআই শুক্রবার ভোর চারটায় নিজ এলাকা থেকে জাহাঙ্গীরকে আটক করার পর শুক্রবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসানের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরআগে নিহতের ভাই শরিফুল অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের ভাই সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চরগ্রামের মৃত আনছার আলী শেখের ছেলে শরিফুল ইসলাম শেখ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলায় বলেছেন, ২১ বছর আগে জাহাঙ্গীর মোড়লের সাথে তার বোন ফাহিমার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার বোন ও ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর বিভিন্ন ইট ভাটায় শ্রমিকরে কাজ করতেন। গত ১ ডিসেম্বর ইসমাইলের মাধ্যমে যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুরের দফাদার ইটের ভাটায় তারা কাজ নেয়। এক সপ্তাহ কাজ করার পর বৃষ্টি ও দুর্যোগের কারণে দু’জনেই তালায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান। এক সপ্তাহ পরে ১৫ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তালা থেকে যশোরে ওই দফাদার ইট ভাটায় তারা কাজে ফিরে যান। বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও তাদের কোনো সন্ধান না পেয়ে সাতক্ষীরার তালা থানায় জিডিও করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার তিনি ফাহিমার মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন। পরে তিনি কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন। মামলার পর অভিযানে নামে পিবিআই। পিবিআই এর এসআই গোলাম আলী ও এসআই শরীফ এনামুল হকের সমন্বয়ে একটি টিম সাতক্ষীরার তালায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। গত ১৩ জানুয়ারি সকালে তার এক ভাবি জানান যশোরের নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টয়লেটের সেফটি ট্যাংক থেকে ফাহিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তিনি এসে মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই