যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসাথে বহিষ্কার করা হয়েছে যবিপ্রবির ম্যাথমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে।
যবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নাম পুরো ক্যাম্পাসকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। যার নেপথ্যে ছিলেন সভাপতি সোহেল রানা। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বাদেও তারা বহিরাগতদের আড্ডাখানায় পরিণত করতেন ক্যাম্পাস। তাদের অনেকেই মাদকের সাথে যুক্ত ছিলেন। অস্ত্র নিয়ে মহড়া চালাতেন দিনরাত। প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতেন শিক্ষার্থীরা। গত ৩১ আগস্ট এক শিক্ষার্থীকে মারপিট করে হলছাড়ার হুমকি দেয় এ গ্রুপের ছাত্রলীগের দু’ নেতা। এছাড়া, ছাত্রলীগের দু’ গ্রুপের মধ্যে প্রতিনিয়ত হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটতো। এসব বিষয় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতও করা হয়। শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও লাঞ্ছনার শিকার হতে হতো। এরপর বর্তমান পরিস্থিতিতে কমিটি স্থগিতের খবরে স্বস্তি ফিরেছে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে।
এদিকে, কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগে সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটির সহসভাপতি আল মামুন শিমন তাকসহ আরও কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে মারপিটের ঘটনায় সভাপতি সোহেল রানা ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক যশোর শহরের কাজীপাড়ার মনিরুল ইসলাম হৃদয়, ঝিনাইদহের মহেশপুরের দুর্গাপুর গ্রামের ইছাদ হাসান, ঝিনাইদহের শৈলকূপার গাড়াগঞ্জ গ্রামের রনি, এছাড়া রাইসুল হক রানা, রাফি ও বেলালকে অভিযুক্ত করেছেন।
অভিযাগে তিনি উল্লেখ করেছেন, শনিবার দুপুর আড়াইটায় শিমন ও আশরাফুল আলম যবিপ্রবির শহীদ মশিউর রহমান হলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় সোহেলসহ অন্যরা দা, চাপাতি, হকিস্টিক, রড, বাঁশের লাঠিসহ তাদের দু’জনকে ধাওয়া করে। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ চালায়। একপর্যায়ে তাদরকে মারতে মারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যায়। তাদের দু’জনকে হকিস্টিক, রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এ সময় শিমনের পকেটে থাকা ছয় হাজার ৭০০ টাকা ও গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়। পরে সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের পরিবহনে করে এনে তাদেরকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্খিত। তবে কঠোর অবস্থানে রয়েছে যবিপ্রবি প্রশাসন। ইতিমধ্যে তারা শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে বহিস্কার করেছেন। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম